কিছু কিছু সৌন্দর্য্য কথা বা ছবি দিয়ে বোঝানো যায় না। চোখ দিয়ে দেখে অনুধাবন করতে হয়। যেমন- সোচি। এটি রাশিয়ার একটি শহর। এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচ এ শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সদ্য শেষ হওয়া গ্রুপ পর্যায়ের পর্তুগাল-স্পেন ম্যাচটি এর মধ্যে একটি।
কৃষ্ণ সাগরের কোল ঘেষে বিশাল স্টেডিয়াম, যার পশ্চাৎ পটভুমিতে ছড়ানো ককেশাস পর্বতমালা। আর থরে থরে সাজানো নান্দনিকতার মিশেলে তৈরি বিশাল সব অবকাঠামো। সাথে রয়েছে শহরবাসীর জন্য যাবতীয় সুযোগ সুবিধার পসরা।
স্পোর্টস শহর হিসেবে সোচি প্রথমবারের মতো আলোর পাদদেশে আসে ২০০৯ সালে, যখন এটাকে ২০১৪ শীতকালীন অলিম্পিকের ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
স্টেডিয়াম থেকে বের হলে চোখে পড়ে বামপাশে কৃষ্ণ সাগর, ডানে ককেশাস পর্বতমাল আর সামনে আনন্দের পসরা সাজিয়ে রাখা আলোক-উচ্ছল শহর।
ভেন্যুর ঠিক বাইরে একটি বিশাল পার্ক, তৈরি করা হয়েছে শিশুদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে।
তবে এ মুহূর্তে পুরো শহরটি যেন প্রস্তুত আগামী এক মাসের বৈশ্বিক আয়োজনটির জন্য। বিমান বন্দর থেকে রাস্তা ঘাট সব জায়গায় চোখে পড়ে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী, যারা বিশ্বকাপের জন্য এখানে আসা প্রত্যেকটি মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য হাসি মুখে প্রস্তুত।
পুরো শহরের খেলার অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে অলিম্পিক এর বিষয়টি মাথায় রেখে। মাঝখানে অলিম্পিক মনুমেন্টকে রেখে চারপাশে সাতটি স্টেডিয়াম। যার মধ্যে একটি হলো ফিস্ট। যেখানে অনুষ্টিত হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ। এর বাহিরে চোখে পড়ে বিশাল বিশাল সব অবকাঠামো যেগুলো ২০১৪ সালে অলিম্পিক ভিলেজ হিসবে ব্যবহার করা হয়েছে।
পর্তুগার-স্পেন ম্যাচের আগের কয়েক ঘন্টা থেকে শহর জুড়ে ছিল দু’দলের সমর্থদের জার্সি গায়ে আর পতাকা নিয়ে আনন্দ উৎসব। এমনকি ১৪৫ কিলোমটিার দীর্ঘ কৃষ্ণ সাগরের বেলাভুমিও বাদ যায়নি উৎসবের জায়গা হিসেবে।
সবকিছু মিলিয়ে যেনো প্রকৃতি আর খেলা এখানে মিলেমিশে একাকার।
এমনকি হোটেল আর রিসোর্টগুলোও খেলা দেখতে আসা বিদেশিদের আকর্ষণের জন্য পসরা সাজিয়ে বসেছে। বাড়তি সুবিধার জন্য ব্যবস্থা করেছে আলাদা কর্নারেরও।
এসব দেখে অনেকে বাড়িয়ে নিচ্ছেন তাদের ছুটি। যেনো এতো সুন্দর জায়গায় আর কটা দিন কাটিয়ে গেলে কী হয়!
সুইজারল্যান্ড থেকে আসা পাচ বছরের আ্যাডাম, যে কিনা রিয়াল মাদ্রিদের কট্টর সমর্থক- চাইছিলো তার প্রিয় ফুটবলার মার্কো আসেনসিও এর বদৌলতে হলেও স্পেন যেন ম্যাচটি জেতে।
যদিও তার বাবা বলছেলিন, "স্পেনীয় হিসেবে আমাদের চাওয়া স্পেন জিতুক। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না পর্তগাল এ মুহূর্তে ইউরো চ্যাম্পিয়ন। কাজেই ম্যাচটি ড্র হলেও আমি খুশি।"
শীতকালীন অলিম্পক আর এবারের বিশ্বকাপেই সীমাবদ্ধ নয় স্পোর্ট সিটি সোচির পরিচয়। মনে রাখতে হবে, এ শহরে অনুষ্টিত হবে রাশিয়ার ফর্মুলা ওয়ান গ্র্যান্ড প্রিক্স ২০২০।
সবকিছু মিলিয়ে খেলার শহর হিসিবে সোচির আন্তর্জাতিক খ্যাতিতে দারুণ খুশি শহরের নিয়মিত বাসিন্দারা।