রাজধানীতে আয়োজিত এক গণশুনানিতে বক্তারা দূষিত পানির জন্য ওয়াসাকে দায়ী করেছেন এবং সমস্যাটি সমাধানে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সেই সাথে তারা খাবার পানির বাণিজ্যিকীকরণের নিন্দা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, এ কাজে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা মদদ দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওয়াসার নিরাপদ পানি আন্দোলনের আয়োজনে ‘নিরাপদ পানি: ওয়াসার দাবি ও জনগণের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়াসার নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং ওয়াসার দূষিত পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা কথা বলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ রাজধানীর পানি সরবরাহ নিয়ে সরকারের ‘মিথ্যা’ বিবরণের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, "উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাছে জমা দেয়া বিভিন্ন প্রতিবেদনে ওয়াসা দাবি করেছে যে ঢাকার ৯৮ শতাংশ মানুষ তাদের সরবরাহ করা নিরাপদ পানি পান করেন। কিন্তু এমনকি ওয়াসার সরবরাহ করা সবচেয়ে বিশুদ্ধ পানিও পান করার আগে ফুটিয়ে নিতে হয়। তাহলে একে পানের জন্য কীভাবে নিরাপদ বলা যায়?"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দূষিত পানি পানের ফলে অসুখের কারণে নাগরিকদের ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
আনু মুহাম্মদের অভিযোগ, ওয়াসা পানি দূষণমুক্ত করার চেয়ে বরং তা বাণিজ্যিকীকরণে বেশি অর্থ ব্যয় করছে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা বলেন, নিরাপদ খাবার পানির অভাব শুধু ঢাকার সমস্যা নয় বরং পুরো দেশ এতে আক্রান্ত।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ডা. লেলিন চৌধুরী জানান, রাজধানীর মধ্যে জুরাইনে সবচেয়ে দূষিত পানি সরবরাহ করা হয়। এ সমস্যা সমাধানে জনসম্পৃক্ততা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স অভিযোগ করেন, জুরাইন এলাকায় এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প খাবার পানির বাণিজ্যিক ব্যবহার বাড়াতে বড় ভূমিকা পালন করছে।
ওয়াসার নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ওয়াসার বর্তমানে সরবরাহ করা পানির অবস্থা এত খারাপ যে তা ফুটানোর পরও পানের অযোগ্য থেকে যায়।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জুরাইনে সরবরাহ করা পানির শরবত খাওয়ানোর চেষ্টার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওয়াসার পানির মান তারপর থেকে আরও খারাপ হয়েছে।
গণশুনানিতে অনেক বাসিন্দা ওয়াসার অনিরাপদ পানি নিয়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান।