দেশ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের অংশ হিসেবে ১৪ মে হতে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান কার্যক্রম। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডা. সানিয়া তাহমিনা বাংলাদেশে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, "২০১০ সালের আগে দেশে জলাতঙ্ক রোগের কারণে আনুমানিক দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জলাতঙ্ক ছড়ানোর ৯৫ শতাংশের অধিক ঘটনার জন্য দায়ী কুকুর। তারপর আছে বিড়াল, শিয়াল ইত্যাদি"। দেশে প্রায় ১৬ লাখ কুকুর রয়েছে যার ৮০ শতাংশেরও অধিক রাস্তায় থাকে বলেও এসময় জানান ডা. তাহমিনা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহযোগিতায় দুই সিটি করপোরেশন এ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদানের এই কার্যক্রমের লক্ষ্য হলো ২০২২ সালের মধ্যে সারাদেশে কমপক্ষে তিন রাউন্ড টিকা দিয়ে জলাতঙ্ক নির্মূলের উদ্দেশ্য পূরণ করা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, "জলাতঙ্ক এক মারাত্মক ব্যাধি যা কুকুরের কামড় থেকে হয়। কিন্তু আমরা কুকুর হত্যা করতে পারি না। আমরা টিকা দেয়ার মাধ্যমে এ রোগ নির্মূল করব।"
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, "কুকুর আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে তাই তাদের মারা যাবে না। যদি আমরা তাদের যথাযথভাবে টিকা দিতে এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে পারি তাহলে দেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূল করতে পারব।"
সিডিসির উপপরিচালক ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী তার স্বাগত বক্তব্যে জানান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনের আগেই ২০২২ সাল নাগাদ দেশ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।