গরুর মাংস ওজনে কম দেয়াকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার খাটিহাতা এবং সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যকার সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (৭ জুন) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কুমিল্লা-সিলেট এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্তত দেড় ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের ধন মিয়া নামের এক ব্যক্তি গরুর মাংস কিনতে খাটিহাতা বিশ্বরোড এলাকার বাজারে আসে। এ সময় মাংস ওজনে কম দেয়া নিয়ে খাটিহাতা গ্রামের মাংস বিক্রেতার সাথে ধন মিয়ার বাদানুবাদ হয়। পরে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ঘটনাটি উভয় গ্রামের ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এ সময় পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদেরকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে সরাইল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খাটিহাতা গ্রামের আকলাস মিয়া জানান, কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই একদল লোক টেটা, বল্লম নিয়ে খাটিহাতা গ্রামে আক্রমন করে। খাটিহাতা গ্রামবাসীও পাল্টা আক্রমন করে। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামের পুরুষের পাশপাশি মহিলারাও সংঘর্ষের সমর্থনে এগিয়ে আসে।
আকলাস মিয়া বলেন, আমরা এই ধরনের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ চাইনা। শান্তিচাই। যারা অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের বিচার চাই।
অন্যদিকে কুট্টাপাড়া গ্রামের আবু সাত্তার জানান, খাটিহাতা গ্রামে বাজার হওয়ায় ওরা কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজনের ওপর প্রভাব খাটায়। এরই অংশ হিসেবে আজ মাংস কেনা-বেচা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। আমরা এ ধরনের সংঘর্ষ চাইনা। আমরা শান্তিচাই।
তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সরাইল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, মাংস কেনা-বেচা নিয়েই সংর্ঘষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে কুমিল্লা-সিলেট এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্তত দেড়ঘন্টা সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে রাস্তার দুই দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে সরাইল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে অন্তত অর্ধশত শটগান এবং ২০ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে প্রায় দেড়ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষে আহতদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।