বগুড়ার ধুনটে চাঁদা না পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাহেনা বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধুর বাঁ হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। কনুই পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হাতটি ফেলে দেওয়া হয় ঘটনাস্থলের পাশে একটি পুকুরে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী, সন্তানসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১০ জুন) সকালে উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়নের কৈগাড়ি গ্রামে এ ঘটনার পর মুমূর্ষু অবস্থায় সাহেনা বেগমকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ও অন্যদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ পুকুর থেকে বিচ্ছিন্ন হাত ও কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার এবং ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
আহতদের অন্যান্যরা হলেন- সাহেনা বেগমের স্বামী কপিল উদ্দিন (৭০), তার ছেলে রুবেল (২৪), নূরুন্নবী (৩০), একই গ্রামের তফুরা বেগম (২৮) ও সুফিয়া বেগম (৪০)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের স্বজনরা জানান, মাস তিনেক আগে কৈগাড়ি গ্রামে রাসেল স্মৃতি সংঘ নামে স্থানীয় ক্লাবের সোলার প্যানেলের ব্যাটারি চুরি হয়। ওই ব্যাটারি কেনার জন্য সোমবার সকালে গ্রামের আল-আমিন (২৪) ও বিপ্লব মিয়া (২৫) প্রতিবেশী রুবেলের কাছে ১০০ টাকা চাঁদা দাবি করে। ক্লাবের সদস্য না হওয়ায় ওই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান রুবেল।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আল-আমিন ও বিপ্লব ১৫-২০ জনকে সঙ্গে নিয়ে রুবেলকে মারধর করতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বাধা দিলে তারা রুবেলের বাবা, মা ও ভাইসহ প্রতিবেশিদের কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে আল-আমিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে রুবেলের মা সাহেনা বেগমের বাঁ হাতের কনুই পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। দুর্বৃত্তরা বিচ্ছিন্ন হাতটি তুলে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।
খবর পেয়ে ওসি ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে যায় ধুনট থানার পুলিশ। তারা পুকুর থেকে বিচ্ছিন্ন হাত ও কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। হামলায় জড়িত থাকায় আল-আমিন, বিপ্লব মিয়া ও রনি খাতুনকে আটক করা হয়।
ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, ক্লাবের ব্যাটারির চাঁদা নিয়ে বিরোধে এ হামলা হয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক গৃহবধুর বাঁ হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের বগুড়া শজিমেক ও ধুনট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া হামলায় জড়িত থাকায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।