পাওনা টাকা চাওয়ায় কোহিনুর খাতুন (৪২) নামে এক নারী ব্যবসায়ীকে মারপিটের অভিযোগে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বগুড়ার ধুনট থানার এএসআই শাহানুর রহমানকে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরের এ ঘটনায় আহত নারীকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া বৌ-বাজার এলাকার কোহিনুর খাতুন জজকোর্টের সামনে ভাত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এএসআই শাহানুর রহমান ২০১০ সালে বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালীন কোহিনুরের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্রে তিনি কোহিনুরের বাসায়ও আসা-যাওয়া করতেন। বিভিন্ন সময় কোহিনুরের কাছে ধার হিসেবে ৬০ হাজার টাকা নেন শাহানুর।
এরইমধ্যে ২০১৬ সালে ধুনট থানায় বদলি হয়ে কোহিনুরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এএসআই শাহানুর রহমান। এদিকে, পাওনা টাকা না পেয়ে কয়েকদিন আগে এএসআই শাহানুরকে উকিল নোটিশ দেন কোহিনুর। নোটিশ পেয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোহিনুরকে শুক্রবার ধুনট থানায় যেতে বলেন ওই পুলিশ সদস্য।
সে অনুযায়ী শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ধুনট থানায় যান ওই নারী। পাওনা টাকার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এএসআই শাহানুর। শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে তিনি কোহিনুরকে মারপিট করে থানা থেকে বের করে দেন। চিকিৎসা নিতে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখানেও তাকে মারপিট করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে সেখানে ভর্তি করে দেন।
চিকিৎসাধীন কোহিনুর খাতুন জানান, এএসআই শাহানুর কৌশলে তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। দীর্ঘদিনে টাকা ফেরত না দেওয়ায় উকিল নোটিশ করেছিলেন। নোটিশ পেয়ে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শুক্রবার তাকে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে আহত করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ধুনট থানার এএসআই শাহানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সে (কোহিনুর) তাকে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিল। ঝামেলা এড়াতে তাকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আপোষনামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এরপরেও শুক্রবার থানায় এসে তাকে মামলার ভয় দেখালে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছেন।
বগুড়ার ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, ওই এএসআইয়ের সঙ্গে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ওই নারী শুক্রবার থানার পাশে মহিলা কলেজের সামনে এসেছিলেন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এএসআই শাহানুর তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছেন। এসপির নির্দেশে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে এএসআই শাহানুরকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।