উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধ ‘আউটার রিং রোডের’ একটি অংশ ধসে পড়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ সরকার ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) যৌথ সহায়তায় প্রায় ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ রোডের একটি অংশ ধসে পড়ে।
চলতি বছরের শেষদিকে এই রিং রোডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা রয়েছে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের পাশ দিয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সড়কটি উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নগরবাসীরা। এনিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিরুদ্ধে বিশাল প্রকল্পের এই রিং রোডের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
অবশ্য সিডিএর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর দাবি, টানা কয়েকদিনের বৈরী আবহওয়ার কারণে সাগরে জোয়ারের পানি বেড়ে ঢেউয়ের তোড়ে মাটি সরে গিয়ে ধসে পড়েছে পতেঙ্গা রিং রোডের একটি অংশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত নির্মিত আউটার রিং রোড়ের পতেঙ্গা অংশে ওয়াকওয়ের ব্লক সরে গিয়ে দেবে গেছে। বাঁধের ব্লক সরে মাটি তলিয়ে যাওয়া ওয়াকওয়েটি ধসে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাগরের পাশ দিয়ে নির্মিত এই ওয়াকওয়েটি রড দিয়ে কংক্রিট (আরসিসি) ঢালাই না দিয়ে সিসি ঢালাই দিয়ে করা হয়েছে। ওয়াকওয়ে তৈরির জন্য সাগরের বালি দিয়ে জায়গাটি ভরাট করা হয় এতে করে অল্প সময়ের মধ্যেই এটি ধসে পড়ে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, “ঢেউয়ের কারণে মাটি সরে যাওয়ায় ওয়াকওয়ে ধসে পড়েছে। সেগুলো সরানো হচ্ছে। পাশাপাশি ধসে পড়া স্থানগুলো পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।”
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাধারণত সাগরপাড় ঘেঁষে এসব প্রকল্পে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এ ধরনের কাজগুলো পাইলিংয়ের ওপর হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ভার বহন করার প্রয়োজন হলে সেখানে প্রিকাস্ট কংক্রিট পাইল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ধসে পড়া ওয়াকওয়েটির ক্ষেত্রে এসব করা হয়নি বলেই তা ধসে পড়েছে।”
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ২০০৫ সাল থেকে পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্তআউটার রিং রোড নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। যাচাই শেষে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে জাইকা। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে চারলেনের এ সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।