ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১৮ আগস্ট) এডিস মশাবাহী এ রোগ প্রতিরোধে সরকারের নেয়া কার্যক্রম সম্পর্কেস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আদালতকে অবহিত করার সময় বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অসন্তোষ প্রকাশ করে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়ে আদালত নতুন করে কোনো আদেশ দেয়নি।
আদালত বলেন, “দুই সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা নিলে হয়তো এ রকম পরিস্থিতি হতো না। যাদের বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাদের মানসিকতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।”
এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলে, “ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কতজন মারা গেছেন তা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় দু’রকম তথ্য দেখছি। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৪৮জন কিন্তু বেসরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৭২জন। এটা নিয়ে দু’রকম তথ্য কেন?”
জবাবে ডিএজি বলেন, “সরকারি হিসেবে ৪৮জন। যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের কারও কারও অন্য রোগ থাকতে পারে। কারও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।”
কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বছরের পর বছর একই মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে উল্লেখ করে আদালত বলে, “অথচ এওষুধে কাজ হচ্ছে না...একটি ওষুধ বারবার ব্যবহার করলে তা সহনীয় হয়ে যায়, এটা বুঝতে হবে। দেখুন না, এখন অ্যারোসল আর ঠিকমতো কাজ করে না।”
এসময় একজন আইনজীবী বলেন, “অ্যারোসলে মশা মরে না।”
সংশ্লিষ্টরা সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে জনগণের ওপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছে জানিয়ে আদালত আরও বলে, “জনগণকে তাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করতে বলা হচ্ছে...সত্যিকারে যেখানে এডিস মশা থাকে সেখানে ওষুধ ছিটালেই তো হয়। জনগণকে সচেতন হতে হবে- এটা ঠিক। কিন্তু সব দায় জনগণের- এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই।”
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে গেলে আদালত বলেন, “আমরা তো কোনো রুল জারি করিনি। আরেকটি আদালত রুল দিয়েছে। সেখানে রিপোর্ট দিন ” জবাবে ডিএজি বলেন, “আদালত মৌখিকভাবে এক আদেশে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিল। তাই সরকার বিষয়টি জানিয়েছে।”
তিনি সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, “সরকার ডেঙ্গু নিয়ে খুবই আন্তরিক। সকল সরকারি হাসপাতালে ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানি শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। ১০টি সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৪০টি হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। যেসব হাসপাতাল সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছে তাদের আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”