কক্সবাজারের টেকনাফে স্থানীয় যুবলীগ নেতা খুনের ঘটনায় শতাধিক বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা একটি রোহিঙ্গা শিবিরে হামলা চালিয়ে অস্থায়ী ঘরবাড়ি ও এনজিও অফিসগুলোতে ভাঙচুর চালিয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট)দুপুর ১২টায় স্থানীয় জনগণ টায়ার ও প্লাস্টিকের বক্স জ্বালিয়ে টেকনাফ পৌরসভা থেকে লেদা পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক তিনঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এছাড়া, রোহিঙ্গা নেতা নূর মোহাম্মদের বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনবি।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস জানান, “হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা বেলা ৩টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ উপজেলার জাদিমুরায় যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে (৩০) গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বড়ভাই ওসমান গণি অভিযোগ করেন, “একদল রোহিঙ্গা তার ভাইকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পাশের একটি পাহাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।”
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর রোহিঙ্গাদের হাতে আরও দুজন স্থানীয় খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা এবং সাংবাদিকদের হয়রানির খবরও রয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে এপর্যন্ত দুইবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনো প্রত্যাবাসন এখনো হয়নি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারে যেতে রাজি না হওয়ায় এপ্রক্রিয়াও ভেস্তে যায়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এবিশাল আকারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অব্স্থান দীর্ঘায়িত হলে তারা শুধু বাংলাদেশ নয় বরং প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও হুমকি হয়ে উঠবে।
এদিকে, কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আয়াছুর রহমান বলেন, “বর্তমানে আমরা বাংলাদেশিরাই এখানে অনিরাপদ জীবনযাপন করছি।”
আরও পড়ুন: মুখে খাবার তুলে দেয়া উপকারীকেই হত্যা করলো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা
আরও পড়ুন: ইউএনএইচসিআর: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটি প্রক্রিয়া, এককালীন বিষয় নয়
আরও পড়ুন: ফিরতে রাজি না হওয়ায় আবারও ভেস্তে গেলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া