চাঁদপুরের ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাপসাতালে স্ত্রীর মরদেহ রেখে জুয়েল খান নামের এক ব্যক্তি পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ওই নারীর নাম তানজিনা আক্তার। তার গলা ও গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তানজিলা ও তার স্বামী জুয়েল চাঁদপুর পৌর এলাকার ওয়ারলেস বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে একটি বিউটি পার্লারের ব্যবসা করতেন তানজিনা।
তানজিনার ছোট ভাই মেহেদী হাসান জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালুথুবা কৃষ্ণপুর মুন্সীর বাড়ির মুন্নাফ মুন্সীর মেয়ে তানজিনা আক্তারের সঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডি তফাদার বাড়ির নুরু খানের ছেলে জুয়েল খানের বিয়ে হয়। কিন্তু দু’জনের সংসারে ঝগড়া লেগেই থাকতো। প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন জুয়েল। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে জুয়েলের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে।
মেহেদী হাসান আরও জানান, মামলা করায় জুয়েল বদলা নিতে স্ত্রীকে হত্যা করেছে। জুয়েল চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল এলাকায় তার মালিকানাধীন মায়ের দোয়া ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামে একটি দোকানে গাড়ি সার্ভিসিংয়ের কাজ করতো।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সৈয়দ আহমেদ কাজল জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহতের স্বামী মৃত অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু এক ফাঁকে তিনি পালিয়ে যান। প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তিনি ফিরে আসেননি। পরে বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানাকে জানানো হয়।কী কারণে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত শেষে নিশ্চিত করা যাবে।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও ) ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, "সন্ধ্যায় দু’জন যুবক ওই নারীকে হাসাপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই তারা দু’জন পালিয়ে যান। পরে হাসপাতালে পুলিশ আসার পর আমি তাদেরকে সিসিটিভির ফুটেজ দেই।ওই নারীর গলায় আঘাতের দাগ ছিল।"
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, "তানজিনার স্বামী জুয়েল প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য তাকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। জুয়েলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছিলেন তানজিনা। ওই মামলাকে কেন্দ্র করেই তানজিনাকে হত্যা করা হতে পারে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা তার এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবো।"