ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তে প্রবেশ করে ‘বাহাদুরি' দেখানোয় বিজিবি বাধ্য হয়েই গুলি করেছে বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় জার্মানির বার্লিনে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলি ও এক বিএসএফ সদস্যের নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো যেসব তথ্য দিচ্ছে তা সঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই ঘটনার জন্য তিনি বিএসএফকেই দায়ী করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "তারাই (বিএসএফ) আমাদের এখানে এসেছে এবং এসে তারা বাহাদুরিও করেছে৷ আমাদের ছেলেদের (বিজিবি) তাদের লাস্ট জব হিসেবে বাধ্য হয়ে গুলি করতে হয়েছে।"
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, "এটা ওয়ান ইনসিডেন্ট (একটা ঘটনা)। একটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটেছে।"
গত দশ বছরে ৩০০ এর বেশি বাংলাদেশি মারা গেছে বিএসএফের গুলিতে এমন তথ্যের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রী বলেন, "আগে বিএসএফ বছরে অনেকজনকে মেরে ফেলতো আমরা তখন কেবল দু:খ করেছি৷ কিন্তু গত বছর মাত্র তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এই ধরনের ঘটনায়।"
একজনের মৃত্যুও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা আগে কখনও মামলা করিনি। ভারত এখন নতুন করে করেছে। কোনো ‘পন্ডিতও’ আমাদেরকে আগে মামলা করার কথা বলেননি।" আগামীতে বাংলাদেশও এই পথে হাঁটতে পারে বলে এসময় জানান তিনি৷
প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি ভারত সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের উষ্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং তা অর্জন হয়েছে।"
ড. মোমেন বলেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক আমরা আবার দাঁড় করিয়েছি। উনিও নতুন ভাবে জয়লাভ করেছেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীও জয়লাভ করেছেন, (এরপর) এটা প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। বিভিন্ন ধরনের সমঝোতা হয়েছে। এগুলো হবে তা আমরা আশা করেছি কিন্তু আসল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে টু ডেভেলাপ দিস ওয়ার্ম রিলেশনশিপ।"
ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "এটা শুধু ডাহা মিথ্যাই না, অনেকে নানা কথা বানিয়ে যাচ্ছেন যারা বিষয়টি পছন্দ করছেন না। আমরা দিয়েছি কিছু এবং সেই সাথে পেয়েছিও কিছু।"
ফেনী নদীর পানি প্রসঙ্গে তিনি জানান, "ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে। এরমধ্যে বড় নদী সাতটি। তিস্তা নদীর বিষয় ভারত স্বীকার করেছে বণ্টন হবে। কিছু সমস্যা থাকায় তারা ২০১১ সালের সেই ওয়াদা রাখতে পারেনি। ফেনীতে যে পানি দেওয়া হচ্ছে তা খুবই সামান্য। ১২৬ কিউসেকের মধ্যে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক ১ ভাগেরও কম। মানবিকতার জন্যই বাংলাদেশ এই পানি দিচ্ছে।"