রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় তিন দফা দাবি মেনে নিতে রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত ২০ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে ফের আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) বেলা পৌনে ৩টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করে মহাসড়ক ছেড়ে চলে আসে শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
সড়ক অবরোধের সময় রাবি'র ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাব মিয়াকে মারধরের অভিযোগে আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ নামের শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বহিষ্কার দাবি করে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাবসহ ফিন্যান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সোহরাবকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। পরে তারা দুজন মিলে সোহরাবকে রড দিয়ে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার মাথা ফেটে রক্ত বের হলে তারা মারধর বন্ধ করেন। হামলায় আহত সোহরাবকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তিন দফা দাবিগুলো হলো-আসিফ ও নাহিদসহ মারধরের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ করা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সোহরাবের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা।
ছাত্রলীগের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন:
এদিকে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনার তদন্তের জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। কমিটির সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি মাহফুজ আল আমিন, সুরঞ্জিত প্রসাধ বৃত্ত, যুগ্ম-সম্পাদক সাব্বির হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু।
বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সেলে জমা দিতে বলা হয়।
এদিকে হামলায় অভিযুক্ত আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সোহরাবকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।