বাবা রুনু খান জামালপুর সদরের পৌর কাউন্সিলর, ছেলে রাকিব খান জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। দু’জনে মিলে পিটিয়েছিলেন এক সাংবাদিককে। সেই ঘটনায় বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সেই মামলার স্বাক্ষী আবার আরেকজন সাংবাদিক। স্বাক্ষী দিতে বিরত থাকতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজ না হওয়ায়, স্বাক্ষীর ওপর হামলা করে দুই পা ভেঙে দিয়ে রাগ মেটালেন ছাত্রলীগ নেতা রাকিব খান।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকার পুরাতন এসডিওর বাড়ির পেছনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দ জামালপুরে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা ও স্থানীয় “পল্লীকণ্ঠ প্রতিদিন” পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি।
আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দ জানান- ডায়াবেটিসে থাকায় তিনি প্রতিদিন সকাল ও রাতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে শহরের বাইপাস রোডে হাঁটাহাটি করেন। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন রাতে তার দেওয়ানপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে বাইপাস রোডে হেঁটে যাওয়ার সময় এসডিওর বাড়ির পেছনে ওঁৎ পেতে থাকা পৌর কাউন্সিলর রুনু খানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রাকিব খান, তুষার খান, স্বজন খান ও তুহিন খানসহ ৪/৫ জন তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা লোহার পাইপ দিয়ে তার দুই পায়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। লোহার পাইপ দিয়ে পেটানোর এক পর্যায়ে তিনি (শেলু আকন্দ) পরে গেলে রাকিব ও তার সহযোগীরা চলে যায়। খবর পেয়ে তার স্বজন ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দ। ঢাকা ট্রিবিউন
শেলু আকন্দ বলেন, “হামলার সময় রাকিব বলতে থাকে, ‘মামলার স্বাক্ষী হইছস না, স্বাক্ষী দিবি, তোর স্বাক্ষী হওয়ার সাধ মিটাইতাছি’।”
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাকিব বা তার বাবা রুনু খানের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বলেন, “অভিযুক্ত রাকিব খানকে বুধবার মধ্যরাতে শহরের মুকুন্দবাড়ি এলাকায় তার বোনের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বাকি হামলাকারীদের আটক অভিযান চলছে। অতি দ্রুত সকল অভিযুক্তকে আটক করা হবে।”
প্রসঙ্গত, ছয় মাস আগে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে দৈনিক কালের কণ্ঠের জামালপুর প্রতিনিধি মোস্তফা মনজুর ওপর হামলা করে বেধড়ক মারধর করেছিলেন কাউন্সিলর রুনু খান, ছেলে রাকিব খান এবং তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় জামালপুর থানায় একটি মামলা হয়েছিল। ওই মামলার নম্বর স্বাক্ষী ছিলেন সাংবাদিক শেলু আকন্দ।