চলন্ত বাসে ঘুমন্ত মেয়েকে রেখে টাকা পয়সা নিয়ে চম্পট দিয়েছে এক সৎ বাবা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাশতৈল পশ্চিমপাড়া ধানখেত থেকে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে কুমুদিনি উইমেন্স মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছে পুলিশ।
সৎ বাবার নাম আলমগীর হোসেন। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার শহরতলীতে।
ভুক্তভোগী মেয়েটি জানান, ৫ বছর বয়সে তার মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই বাবাও মারা যান। পরে তার সৎ মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। সৎ বাবা-মায়ের অনাদর-অবহেলায় একদিন তিনি বাড়ি ছেড়ে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ নেন। কাজের পর সৎ বাবা তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে থাকেন। এমতাবস্থায় বাবা-মায়ের আদর-স্নেহের আশায় প্রতিমাসে বেতনের একটা অংশ সৎ বাবার হাতে তুলে দেন তিনি। এমনিভাবে চলে প্রায় দশ বছর। এরই মধ্যে সৎ বাবা আলমগীরের দৃষ্টি পড়ে তার নামে থাকা তিন বিঘা জমির ওপর। ছলেবলে এই জমি আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ওই সৎ বাবা।
আরও পড়ুন - টাকা শোধ করতে না পেরে মেয়েকে ধর্ষণের অনুমতি দিলো বাবা
ঘটনার দিন গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে সৎ পিতা আলমগীর তাকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা দেন। যাত্রাপথে কিন্তু গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে লোকাল বাসে উঠলে তিনি এর কারণ জানতে চান। এ সময় সৎ বাবা জানান, “হাটুভাঙ্গা (গাজীপুর) এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় রান্না করা হয়েছে, সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর বাড়ি যাব।” এরইমধ্যে চলন্ত বাসে সৎ বাবা তাকে শশা ও আমড়ার সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। এতে বাসেই অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
পরবর্তী সময়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে জ্ঞান ফিরলে কুমুদিনী হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ভুক্তভোগী মেয়েছি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়েটি বলেন, “একটু আদর-স্নেহের আশায় বাবাকে টাকা দিয়েছি। তবু তা মেলেনি।”
মির্জাপুর থানার ওসি সায়েদুর রহমান বলেন, “মেয়েটির নামে থাকা তিন বিঘা জমি আত্মসাৎ করার জন্যই যেকোনো উপায়ে তাকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সৎ বাবা এই পন্থা অবলম্বন করেছে। মেয়েটি সুস্থ হলেই ওই সৎ বাবার বিরুদ্ধে মামলা করা।”