দেশে ক্যান্সার রোগী আছেন প্রায় ১৫ লাখ। আর এদের মধ্যে প্রতিবছর অন্তত দেড় লাখ রোগীর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক আলোচনা সভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাতে এ তথ্য তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগ জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ আলোচনার আয়োজন করে।
দেশে ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা দেশে এমন রোগীদের তথ্যভাণ্ডার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক সাবেরা বলেন, “বিদেশে গেলে আমরা সমস্যায় পড়ি। অনেক বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক আমাদের কাছে জানতে চান বাংলাদেশে কত ক্যান্সার রোগী আছেন এবং তাদের মধ্যে কতজন মারা গেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে সঠিক তথ্য না থাকায় আমরা কোনো যথাযথ উত্তর দিতে পারি না।”
তিনি অবিলম্বে ক্যান্সার রোগীদের তালিকা করতে সরকার, বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতি আহ্বান জানান।
এ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ বলেন, মেয়েদের বয়স সন্ধিকালে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে প্রায় ৯৯ শতাংশ জরায়ু ক্যান্সার নিরাময় করা যায়। কিন্তু এখানে তা করা হয় না। যদি অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশ টিকার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে তাহলে আমরা কেন করতে পারি না?”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক এমএ খান বলেন, ক্যান্সার রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা বাংলাদেশ দিতে পারে। সুতরাং ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য রোগীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বিদেশে যাওয়া বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, এটা উদ্বেগজনক যে দেশে ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার রোধে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে সরকার ও গণমাধ্যমকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান ডা. স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, খাদ্যে ভেজাল, পরিবেশ ও বায়ু দূষণ, ধূমপান ও জিনগত সমস্যাসহ নানা কারণে দেশে ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাকিব উদ্দিন আহমেদ শিশুদের প্রতিদিন ব্যায়াম করা ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়ানোর আহ্বান জানান। কারণ এটি ভবিষ্যতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
অনুষ্ঠানে আটজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞকে সম্মানিত করা হয়।