পরিবেশ সংরক্ষণ আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চিকিৎসা বর্জ্যের মাধ্যমে দূষণ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে! বিষয়টি জানিয়ে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সিভিল সার্জন বরাবর একটি নোটিশও পাঠিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশগত ছাড়পত্র না নিয়েই এতদিন ধরে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। হাসপাতালটির উৎপন্ন বর্জ্যের পরিশোধন, বিশোধন ও অপসারণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বলে কিছু্ই নেই, নেই তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি), ইনসিনারেটরও। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে দিনের পর দিন বর্জ্য ফেলছে খোলা জায়গায়, শহরের নালায়। যা পরিবেশগত দিক ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিসরূপ।
আরও পড়ুন- হাওরে পাখি শিকারিদের বিষটোপে মারা গেল ৫০০ হাঁস
দীর্ঘ দিনের অভিযোগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) মোতাবেক হাসপাতালে কার্যক্রম দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতিকর বর্জ্য “চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮” অনুযায়ী পরিশোধন, বিশোধন ও অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জরুরী নোটিশ প্রদান করেছে মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর।
গত ২২ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়- মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরণের প্রতিষ্ঠানের (হাসপাতাল) কার্যক্রমের ফলে উৎপন্ন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার ইটিপি, ইনসিনারেটর ইত্যাদি থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু মৌলভীবাজার-২৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতিরেকে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন - নদীকে দেখানো হলো খাস জমি, ইজারা দিলো জেলা প্রশাসন!
সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও পরিবেশ আইনের প্রতি চরম উদাসীনতা ও অবহেলার বিষয়টি জানাতে মৌলভীবাজারে জেলা প্রশাসক বরাবরও নোটিশের একটি অনুলিপিও প্রদান করেছে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার-২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পার্থ সারথি দত্ত কাননগো মূল বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন “হাসপাতালকে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব রাখতে আমরা খুবই আন্তরিকতার সহিত কাজ করে যাচ্ছি। পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
অন্যদিকে খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও সরকারি আইনকে অবজ্ঞা করায় বিস্ময় প্রকাশ করে মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, “সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না করে হাসপাতালটি দিনের পর দিন দূষণ সৃষ্টি করছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য এখনও কোনো আবেদন জমা পড়েনি।”
আরও পড়ুন - বনরুই পাচার ও বিলুপ্তি ঠেকাতে সরকারের পদক্ষেপ কি যথাযথ?