বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় বন্ধুকে দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ, ব্লেড দিয়ে শরীর ক্ষত-বিক্ষত ও গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টার পর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রফিকুল ইসলামকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে ওই গৃহবধূর বাবা শাজাহানপুর থানায় রফিকুল ইসলাম ও তার অজ্ঞাত বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
শনিবার দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলায় একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের গাইনী বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারী শনিবার জানান, নারী আসক্তির কারণে স্বামী রফিকুলের সঙ্গে তার দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এ কারণে তাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করা হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় তিন বছর আগে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর এক বছর পর রফিকুল তাকে তালাক দেন। এরপর আরও দুটি বিয়ে করেন রফিকুল। কিন্তু তাদের সঙ্গেও তার বিচ্ছেদ হয়। সর্বশেষ প্রায় দেড় বছর আগে রফিকুল নিজের ভুল স্বীকার করে ভুক্তভোগী তাকে আবার বিয়ে করেন।
আরও পড়ুন: বন্ধুকে দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণের পর ক্ষতবিক্ষত করলেন স্বামী!
ওই নারী আরও জানান, বিয়ে করার পরও রফিকুলের নারী আসক্তি কমেনি। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের ঝগড়া হতো। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রফিকুল তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় যান। এ সময় স্বামীর সহযোগিতায় ওই বন্ধু তার হাত বেঁধে ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন। এরপর স্বামী রফিকুল তাকে মারপিটের পর ব্লেড দিয়ে হাত ও বুকে আঘাত করেন। এক পর্যায়ে বোতল থেকে তার অ্যাসিড ঢেলে ঝলসে দেওয়া হয়। এতেও শেষ হয়নি নির্যাতন। তার মাথার ডান পাশের চুলও কেটে দেওয়া হয়।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর মাথার ডান পাশে চুল কাটা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ও ফোসকা রয়েছে। এছাড়া তিনি ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। এসব ব্যাপারে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন জানান, রবিবার সকালে ওই গৃহবধূর বাবা থানায় রফিকুল ও তার অজ্ঞাত বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্বীকারোক্তি না দিলে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, রফিকুল এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কী না সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।