আজ ১৫ আগস্ট বাঙালির শোকাবহ দিন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী। সারাদেশে দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নৃংশসভাবে শাহাদাৎ বরণ করেন। ধানমন্ডির নিজ বাসভবনেই ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কে এই হত্যাকান্ডের শিকার হন।
কিছু বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিকের চক্রান্ত এবং সেনাবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল উচ্চাভিলাষী সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল।
সেইদিন শুধু মাত্র প্রবাসে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
আগস্টের এ হত্যাকাণ্ডে আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনসহ বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ এবং কয়েকজন নিরাপত্তা কমকর্তা ও কর্মচারী। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জাতি আজ গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে এই শহীদদেরও।
১৫ আগস্ট জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত ও অভিশপ্ত। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দীর্ঘ ৩৪ বছরেরও বেশি সময় পর সেই কলঙ্ক থেকে জাতির দায়মুক্তি ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার চূড়ান্ত বিচারের রায় কার্যকর করা হয়। ওইদিন মধ্যরাতের পর ৫ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাঙালির বিজয়ের অভিযাত্রাও আরেক ধাপ এগিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান। ঐক্য, প্রেরণা ও স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক। জাতির স্বপ্নের রূপকার। তাঁর ইস্পাত কঠিন নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে দিয়েছে অধিকার আদায়ের অমর প্রেরণা।
পাকিস্তানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। অমর বাণীতে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহ্বান ছড়িয়ে পড়েছিল নিপীড়িত কোটি বাঙালির প্রাণে প্রাণে।
১৫ আগস্টকে স্মরণ রেখে আজ সারাদেশে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দিবসটি পালনে সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
মতামত দিন