ডিআইজি আরও বলেন, "অতএব মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের চরমপন্থী করছে কিনা তা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই, যেহেতু আমাদের কাছে আটকৃতদের অধিকাংশই এসেছে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে।"
সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের চেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জঙ্গিবাদের চর্চা বেশি- এমন ধারণা অধিকাংশ জনসাধারণের মধ্যে থাকলেও নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, মাদ্রাসার চেয়ে সাধারণ শিক্ষায় পড়ুয়ারাই জঙ্গিবাদে বেশি জড়িত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জঙ্গিবাদে জড়িতদের ৫৬ শতাংশই সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত, অন্যদিকে জঙ্গিবাদে জড়িতের মধ্যে ২২ শতাংশ এসেছে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় থেকে।
রাজধানীর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত "প্রিভেন্টিং টেরোরিজম অ্যান্ড এক্সট্রিমিজম থ্রু কমিউনিটি এনগেইজমেন্ট' শীর্ষক সেমিনারে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. মনিরুজ্জয়ামান এ তথ্য জানান।
পুলিশ সদর দফতর এই গবেষণাটি চালায় ২৫০ জন ব্যক্তির উপর যারা ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হয়েছেন।
মনিরুজ্জামান বলেন, আটককৃতদের ৫৬ শতাংশই সাধারণ শিক্ষা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে আর মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে ২২ শতাংশ। এছাড়া বাকি ২২ শতাংশ ছিল অশিক্ষিত অথবা ইংরেজি মাধ্যম থেকে আসা।"
অন্যদিকে ৮০ শতাংশই ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে প্রভাবিত হয়েছে, বাকি ২০ শতাংশ ছিল বন্ধু অথবা পরিচিতদের দ্বারা প্রভাবিত, যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, "অতএব মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের চরমপন্থী করছে কিনা তা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই, যেহেতু আমাদের কাছে আটকৃতদের অধিকাংশই এসেছে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে।"
মনিরুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারবে না। দীর্ঘমেয়াদের জন্য জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি; যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আলেম-ইমাম ও সামাজিক কমিউনিটির অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমাদের উচিত বিভিন্ন ধরণের মৌলবাদবিরোধী কার্যক্রম শুরু করা।
অনুষ্ঠানের বক্তারা বলেন, জঙ্গিবাদ রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজটি করে যাচ্ছে। কিন্তু এটিই যথেষ্ঠ নয়, কারণ কেবল পুলিশের অভিযান দিয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
বক্তারা আরও বলেন, যেহেতু ৮০% জঙ্গিই ইন্টারনেটের দ্বারা প্রভাবিত, তাই একটি শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থাও গড়ে তোলা প্রয়োজন।
মতামত দিন