স্থানীয়রা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন তিনি
সিরাজগঞ্জের কড্ডা ফাঁড়িতে খণ্ডকালীন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মুনতাছির মাহমুদের বিরুদ্ধে এক সেনাসদস্যকে বিনা অপরাধে গালমন্দ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে ট্রাফিক ফাঁড়ির অদূরে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে মাইক্রোবাস রাখায় ওই সেনাসদস্যকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মুনতাছির মাহমুদের বর্তমান কর্মস্থল রাজশাহী জেলা সদরে। কোরবানি ঈদের জন্য খণ্ডকালীন দায়িত্ব পালনে সিরাজগঞ্জের কড্ডা ফাঁড়িতে সংযুক্ত হন তিনি। আর মারধরে আহত সেনাসদস্য আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের একজন সৈনিক (সেনা নং-১৮১১৮০৯)। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলার জালালাবাদ সেনানিবাসের এসআইএনটি বিভাগে কর্মরত। ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল থেকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার নিশিবয়রা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি।
মারধরের শিকার সেনা সদস্য আনোয়ার বলেন, “আমরা ১০ জন সহকর্মী মিলে ভাড়া গাড়িতে চড়ে উত্তরাঞ্চলে যাচ্ছিলাম। গাড়িটি আমি নিজেই চালাচ্ছিলাম। আমার গন্তব্য বেলকুচি হওয়ায় কড্ডা মোড়ের দক্ষিণ লেনে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়ি। তার একটু আগেও আমি চালকের আসনে বসেছিলাম। হঠাৎ ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে এখানে গাড়ি থামিয়েছিস কেন, জানতে চান এবং ‘তুই’ সম্বোধন করেন। প্রতিবাদ করায় হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমাকে আঘাত করেন। সরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দিলেও তিনি পরপর অন্তত ৫ টি ঘুষি মেরে আমাকে রক্তাক্ত করেন। বিষয়টি দেখে স্থানীয় লোকজন ও সঙ্গে থাকা আমার সহকর্মীরা হতভম্ব হয়ে যান। স্থানীয়রা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন তিনি। পরে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পালিয়ে যান ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট।”
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর ট্রাফিক ফাঁড়ির সামনে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের জানালেও তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি সেনা ইউনিটের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মুনতাছির মাহমুদকে কড্ডা ট্রাফিক ফাঁড়ির সামনে আর দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে কড্ডা ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থানরত রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নিশারুল আরিফ বলেন, আমি সকাল সোয়া ৯ টার পরে এসেছি। এ সম্পর্কে জানা নেই।
রাজশাহী জেলার ট্রাফিক ইনসপেক্টর সৈয়দ মিলাদুল হুদা বলেন, ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি জানতে পেরে সার্জেন্ট মুনতাছিরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেছেন। তার পরিবর্তে সার্জেন্ট আতিকুর রহমানকে ওই স্থানে খণ্ডকালীন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, যতদূর জেনেছি ওই সেনাসদস্য অবৈধভাবে মহাসড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করেন। তাকে নিষেধ করায় তিনি উল্টো হম্বিতম্বি ও সার্জেন্ট মুনতাছিরের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
মতামত দিন