এলাকাবাসীর অভিযোগ, বনবিভাগের অনুমোদন ছাড়াই এসব গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি ও টাকা আত্মাসাৎ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের জোতমনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০টি কাঠাল, বট ও ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বনবিভাগের অনুমোদন ছাড়াই এসব গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি ও টাকা আত্মাসাৎ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, বনবিভাগ কর্তৃক গাছের দাম নির্ধারণ, নিলামের মাধ্যমে গাছ বিক্রি এবং গাছ বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমার নিয়ম রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় এসব নিয়ম উপেক্ষা করে গোপনে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী তমিজউদ্দিনের কাছে একলাখ টাকার বিনিময়ে এসব গাছ বিক্রি করে দেন। কাঠ ব্যবসায়ীর লোকজন গাছ কাটা শুরু করলে স্থানীয়রা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করে। এঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বিষয়টি তদন্ত এবং বোদা উপজেলা প্রশাসন গাছগুলো জব্দ করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসকে নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ১৪/১৫ বছর বয়সী বড় বড় এসব গাছের মূল্য প্রায় ৪ থেকে ৫লাখ টাকা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী জানান, “ময়দানদিঘি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের নির্দেশে এই গাছ গুলো কাটা হয়েছে।” গাছগুলো আশেপাশের ক্ষেতের ক্ষতি করছেন এমন অভিযোগের কারণে কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র রায় বলেন, “স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করেই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে।”
ময়দানদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জানান, “বিদ্যালয়ের গাছগুলো কাটার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, আমি নিয়ম মেনে গাছগুলো কাটার পরামর্শ দিয়েছি।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক জানান, “অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বোদা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ হাসানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান জানান, “অভিযোগের পর গাছগুলো জব্দ করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মতামত দিন