র্যাব জানায়, নিহত দু’জনই কুখ্যাত ডাকাত জকিরের সহযোগী এবং গতবছরের নভেম্বরে ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে তাদের হামলায় র্যাবের ২ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন
কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫) সদস্যদের সঙ্গে “বন্দুকযুদ্ধে” রোহিঙ্গা ডাকাত জকির বাহিনীর ২ সদস্য নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে টেকনাফের শাপলাপুর মেরিনড্রাইভ সড়কে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও র্যাবের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে র্যাবের ৩ সদস্য আহত হয়েছে।
নিহত ডাকাতরা হলো, টেকনাফ উপজেলার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নুর আহমদের ছেলে নুর কামাল (৩২) ওরফে ডাকাত সোনায়া ও মৌচনি ক্যাম্পের আবদুস শুক্কুরের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪) ওরফে ডিবি সাইফুল। তারা দু’জনই সাতবছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নেয়।
র্যাব জানিয়েছে, নিহত দু’জনই ক্যাম্পের ত্রাস কুখ্যাত ডাকাত জকিরের সহযোগী এবং অস্ত্র ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পোশাক সংগ্রহের দায়িত্বে ছিল। তাদের কাছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। গতবছরের ৩০ নভেম্বর ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে তাদের হাতে র্যাবের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছিল।
র্যাবের টেকনাফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জানান, “বৃহস্পতিবার রাতে শামলাপুল মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন সমুদ্র সৈকত এলাকায় অভিযানে নামে র্যাব। সেসময় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে র্যাবের হাবিলদার খায়রুল, এএসআই আবু কায়সার ও সার্জেন্ট হুমায়ুন আহত হন।
এরপর র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালালে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এসময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রোহিঙ্গা ডাকাত নুর কামাল ও সাইফুল ইসলামকে উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি বন্দুক, ছয়টি গুলি, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ, দুটি আইডি কার্ড এবং ৪০ হাজার পাঁচশ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে টেকনাফ থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।
সম্প্রতি টেকনাফের নয়াপাড়া, শালবাগান ও জাদিমোরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অস্ত্রধারী জকির বাহিনীসহ বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ মাদক ব্যবসা, খুন, অপহরণসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এর আগেও সন্ত্রাসীদের সাথে আইনশৃংখলা বাহিনীর গোলাগুলির একাধিক ঘটনা ঘটেছিল। এতে রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরুল আলমসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মে থেকে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর কক্সবাজারে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বেড়েছে। গত ১১ মার্চ পর্যন্ত মোট ৭৭জন রোহিঙ্গা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। এরমধ্যে পুলিশের অভিযানে ৩১, বিজিবি’র অভিযানে ২২ ও র্যাবের অভিযানে ২৪জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
মতামত দিন