শনিবার আইইডিসিআর থেকে ঘোষিত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ওই ব্যক্তি ছিলেন
ঢাকা থেকে ট্রাকে রংপুরে বাড়ি যাওয়ার পথে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেওয়া শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত সেই দিনমজুর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান সঞ্চয় এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, “বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রংপুরে ধাপ মডার্ন মোড় থেকে উদ্ধার ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ল্যাব থেকে আসা রিপোর্টে এই তথ্য জানতে পারি। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হতে তার শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। সেখান থেকেও শনিবার রাতে পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।”
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি গত ২৮ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে ট্রাকে করে রংপুরের বাড়ি ফিরছিলেন। পথে অন্য যাত্রীরা তার শ্বাসকষ্ট ও কাশির বিষয়টি টের পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ট্রাকটি ২৯ মার্চ ভোরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে চালক ও হেলপার তাকে নামিয়ে দিয়ে চলে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার পর পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় তাকে প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের আইসিইউতে পাঠানো হয়।
পরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ১ এপ্রিল তাকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। ওইদিন তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে রামেক হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়। পরদিন সেখান থেকে পজেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বগুড়ার স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি প্রকাশ করেনি। তারা বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওই ব্যক্তির নমুনা আইইডিসিআরে পাঠায় এবং সাংবাদিকদের কাছে পুরো ব্যাপারটি গোপন রাখেন।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে জানাজানি হলে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধানসহ পাঁচ চিকিৎসক, আট নার্সসহ ১৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। শনিবার রাতে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুুরুজ্জামান সঞ্চয় আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শনিবার আইইডিসিআর থেকে ঘোষিত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ওই ব্যক্তি ছিলেন।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, “আইসোলেশনে কর্মরত সবাই পিপিই পরিহিত অবস্থায় ওই ব্যক্তির চিকিৎসা দিয়েছেন। তাই এখানকার কাউকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার প্রয়োজন নেই।”
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
মতামত দিন