কুড়িগ্রামে সপ্তাহে তিনদিন ওএমএস’র মাধ্যমে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও, চাল বিক্রির সময় মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নিয়ম
করোনাভাইরাসের কারণে সরকার কর্তৃক নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) শুরু করা হয়েছে। তবে কুড়িগ্রামে সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ না করেই চলছে চাল বিক্রির কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) পৌর এলাকার বিভিন্ন ডিলার পয়েন্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা শহরের পৌর এলাকার দশটি স্পটে ডিলারের মাধ্যমে সপ্তাহে তিনদিন ওএমএস’র মাধ্যমে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে শহরের ভকেশনাল মোড়, পৌরসভা সংলগ্ন, দাদামোড় সহ বিভিন্ন ডিলার পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে চাল কিনতে সাধারণ মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ডিলার প্রতি বরাদ্দের তুলনায় ভোক্তার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হচ্ছে না।
ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহে তিনদিন (রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার) ডিলার প্রতি দশমিক ৮ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি থাকায় মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের বিভিন্ন সতর্কতামূলক উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম জানান, প্রথম দিন ডিলার প্রতি ১ টন করে চাল বিতরণের বরাদ্দ থাকলেও পরে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তা কমিয়ে দশমিক ৮ টন করা হয়। কিন্তু মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই বরাদ্দ দিয়ে ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
চাল বিক্রির ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনও কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না, এমন খবরের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, “পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতা নিলেও এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পুলিশ থাকলে সামাজিক দূরত্ব থাকে, পুলিশ চলে গেলে সামাজিক দূরত্ব থাকে না। তখন সবাই হুড়োহুড়ি শুরু করে।”
এক্ষেত্রে আনসার বাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতির ব্যবস্থা করা যায় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘“সে লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। আগামী দিন থেকে সব নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করছি।”
এ বিষয়ে জানতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করার ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, “বরাদ্দ কম থাকায় ওএমএস’র চাল বিক্রিতে (জনতার চাপে) সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ দিয়ে চেষ্টা করেও কাজ হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি, আগামী দিন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
মতামত দিন