হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রোগী ও তাদের স্বজন এবং অন্যান্য প্রয়োজনে আগতদের মাধ্যমে যেন কোনোভাবেই করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে সে জন্য সতর্কতামূলক একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নানামুখী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে হাসপাতাল প্রশাসন, ডাক্তার, নার্স ও অন্যদের সমন্বয়ে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট র্যাপিড রেসপন্স টিম গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সম্ভাব্য যে কোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় হাসপাতালকে সবোর্চ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক অধ্যাপক বাহার উদ্দিন ভূইয়া।
জীবাণুনাশক পায়ে মাড়িয়ে পার হতে হচ্ছে হাসপাতাল ভবনে প্রবেশের রাস্তা। ছবি: আমিনুল ইসলাম
সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যাথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের আলাদা ভাবে স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে ফ্লু কর্ণার। এছাড়াও জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যায় সেবা নিশ্চিত করতে হটলাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সার্ভিস খোলা রাখা হয়েছে। এই হটলাইনের ফোন করে প্রতিদিন সেবাও নিচ্ছেন অসংখ্য রোগী।
এদিকে, হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রোগী ও তাদের স্বজন এবং অন্যান্য প্রয়োজনে আগতদের মাধ্যমে যেন কোনোভাবেই করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, দেশের অন্যান্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোর জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।
ভবনের নিচতলায় রাখা বেসিনে হাত ধুয়ে নিচ্ছেন হাসপাতালে আগত প্রত্যেক ব্যক্তি। ছবি: আমিনুল ইসলাম
সংক্রমণ ঠেকাতে সব প্রবেশ পথ বন্ধ রেখে মাত্র একটি প্রবেশ পথ খোলা রাখা হয়েছে এবং সেখানে অত্যাধুনিক ডিসইনফেক্টেন্ট ফগিং শাওয়ার বাথ সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন হাসাপাতালে আগত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ডিসইনফেক্টেন্ট ফগিং শাওয়ার সিস্টেম পার হয়ে সেখান প্রবেশ করতে হচ্ছে। এর কিছুটা পরেই রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন ও ফুট বাথ সিস্টেম। এতে হাসপাতালে আগত সবাই তাদের পরিধেয় বস্ত্র, জুতা ও শরীরের উন্মুক্ত অংশ জীবাণুমুক্ত করার পরেই হাসপাতাল ভবনে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন।
এছাড়া, হাসপাতালের বর্হিবিভাগের টিকেট কাউন্টারের সামনে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে, ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে প্রত্যকটি বেঞ্চের মাঝে ৩ ফুট দূরত্ব রাখা হয়েছে। এতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে। একইসঙ্গে হাসপাতালে আগত সবাই যেন এসব বিষয় মেনে চলেন সে জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষ নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বর্হিবিভাগের টিকেট কাউন্টারের সামনে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে। ছবি: আমিনুল ইসলাম
জানতে চাইলে অধ্যাপক বাহার উদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, “সার্বিক ঝুঁকি মোকাবিলায় একাধিক সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। জীবাণুনাশক ও প্রতিরোধক হিসেবে ফগিং শাওয়ার টানেলটি ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। হাসপাতালের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান এটা তৈরি করতে বিশেষ সহযোগিতা করেছেন। এতে বেঞ্জাক্লোনিয়াম ক্লোরাইডের ৪০% দ্রবণ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা জীবাণু ধ্বংসে খুবই কার্যকর।”
এ সময় তিনি আগত প্রত্যেক ব্যক্তিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করেন।
মতামত দিন