নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সাতক্ষীরা সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার ( ২০ মে) ভোর থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন চুনা, খোলপেটুয়া, মাংলঞ্চ ও যমুনা নদীতে অন্যন্য দিনের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকায় মাঝে মাঝে বৃষ্টি এবং দমকা বাতাস বইছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে, বুধবার ভোর রাত থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে উপকূলবর্তী এলাকা শ্যামনগর । বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সি পি পি, সিডিও’র সহায়তা নিয়ে মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য। শ্যামনগর উপজেলা কে ঘিরে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাচ ও পনের নাম্বার পোল্ডারের জেলেখালি দুর্গা বাটি ঘোলা লেবুবুনিয়া সহ ১২ টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে সাতক্ষীরায় ১০নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি ১৭ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলিমিটারের মধ্যে বাসাতের গতিবেগ ঘন্টায় ২০০ থেকে ২২০ কিমি। সাতক্ষীরার উপকূল অঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে ১০ থেকে ১৫ ফিট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সবশেষ ২৪ ঘন্টায় ৪১ মিলি মিটির বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা এলাকার মনিরুজ্জামান বলেন, মাঝে মাঝে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। ভয় হচ্ছে অন্য জাগায় আকাশ গুমট হয়ে আছে। বৃষ্টি হলে ঝড়ের প্রভাব কমে যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম। ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে গেছে অনেকে বিকালে আসবে। গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা, ডুমুরিয়া এবং গাবুরার ২নং ওয়ার্ড এলাকার বেড়িবাধের নাজুক অবস্থা। জলোচ্ছ্বাস হলো হলে কি হবে আল্লাহ জানেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার ভাটার তুলনায় পানি তিন থেকে চার ফিট বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢেউ আমাদের বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলো মেরামতের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা শ্যানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্তা আনম আবুজর গিফারী বলেন, “১২টি স্বেচ্ছাসেবক টিমের ৪হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এছাড়া পুলিশ, নৌবাহিনী, বিজিবি, গ্রাম পুলিশ মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দে নেওয়ার কাজ করছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার ৯০ হাজার ৫০০ মানুষকে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে ১২টি মেডিকেল টিম ও উপজেলায় একটি একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।”
মতামত দিন