লোহার ব্রিজের লোহার ৮৮০ কেজি মালামাল ১৯ হাজার ৬০০ টাকায় অবৈধভাবে বিক্রি করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ও মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বুলুর বিরুদ্ধে সরকারি লোহার ব্রিজের মালামাল বিক্রি করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্রি করা মালামাল জব্দ করেছে পুলিশ।
মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের ভাইজোড়া বাজার এলাকার অমিত হাসান, সুজন ইসলাম ও রিয়াদ হোসেন জানান, শুক্রবার (২৯ মে) সকালে উপজেলার তারাবুনিয়া বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে থাকা লোহার ব্রিজের লোহার ৮৮০ কেজি মালামাল অবৈধভাবে বিক্রি করেন ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু। ক্রেতা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের ইস্রাফিল শেখ। ইস্রাফিল সকাল ১১টার দিকে মালামালগুলো টমটম গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটকে মালামালগুলোর উৎস জানতে চাওয়া হয়। তিনি জানান, চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু কাছ থেকে ১৯ হাজার ৬শ’ টাকায় সেগুলো তিনি ক্রয় করেছেন।
এ সময় ইস্রাফিল মুঠোফোনে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যান সেখানে গিয়ে অনেকের উপস্থিতিতে ব্রিজের মালগুলো বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন এবং মালামালসহ ইস্রাফিলকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া ও মাটিভাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে হাজির হন। তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলুর সামনেই ইস্রাফিলের কাছে ব্রিজের মাল বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন। তবে সে সময় ব্রিজের মাল বিক্রির বিষয়ে প্রশাসনের প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি চেয়ারম্যান।
অমিত হাসান বলেন, আমরা এ ঘটনায় প্রশাসনের সামনেই বিক্ষোভ করে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করেছি।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম বলেন, “টমটমসহ মালামালগুলো পুলিশ জব্দ করেছে। জব্দকৃত ওই মালামাল ও ক্রেতা ইস্রাফিল বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া বলেন, “এ সকল মালামাল ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষণের রাখার যে নিয়ম-কানুন রয়েছে তা পালন করা হয়নি। তাছাড়া উপজেলা নিলাম কমিটির অনুমোদন ছাড়া সরকারি কোনো মালামাল বিক্রির সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান যা কিছুই করেছেন তা অবৈধ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।”
এ বিষয়ে ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, “চেয়ারম্যান নিময় না মেনে অবৈধভাবে মালামালগুলো বিক্রি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
মতামত দিন