অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন বলেন, ‘নিয়ম মেনেই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমার আত্মীয়-স্বজনরা তো ইউনিয়নের বাইরের না। তারা যদি গরীব হয় তাহলে তাদের নাম দেওয়া কি অন্যায়?’
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ১১নং শোলাকুড়ী ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন প্রভাব খাটিয়ে গরীব মানুষের তালিকায় তার তিন ভাই, শ্বশুর, ভায়রা, তিন শ্যালক, শ্যালকের তিন ছেলেসহ ৫১ জন নিকট আত্মীয়ের নাম দিয়ে প্রত্যেকেই ২৫০০ টাকা করে উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়া তার দেওয়া তালিকায় প্রবাসী, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, স্বচ্ছল ও সম্পদশালীদের নাম নিয়ে এলাকাতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে
এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
এছাড়া বিষয়টি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন টাঙ্গাইল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মধুপুর ও উপজেলা চেয়ারম্যান মধুপুর, টাঙ্গাইল বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী ও অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, শোলাকুড়ী ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর নগদ প্রণোদনার আড়াই হাজার টাকার সুবিধাভোগীর তালিকায় চেয়ারম্যানের ভাই, ভাতিজা, ভায়রা, শ্বশুর, শ্যালক, শ্যালকের ছেলেসহ ৫১ নিকট আত্মীয়, পাকা বাড়িওয়ালা, ২০-২৫ বিঘা কৃষি জমির মালিক, ওমান প্রবাসী ও স্বচ্ছল ব্যবসায়ীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া চেয়ারম্যানের আত্মীয়তার সুবাদে প্রভাবশালী, ধর্নাঢ্য বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের নামও রয়েছে তালিকায়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার অর্থ সহায়তার আওতায় ১১ নং শোলাকুড়ি ইউনিয়নে ৩৬০ জন সুবিধাভোগীর নাম চূড়ান্ত করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এ তালিকায় ৯টি ওয়ার্ডে সমহারে বণ্টন না করে চেয়ারম্যান তার ৫১ নিকট আত্মীয়সহ নিজ ওয়ার্ডেই বরাদ্দ দিয়েছেন ৮৬ জনের। আবার উপকারভোগীর নাম ঠিকানা থাকলেও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে অন্য ব্যক্তির। এছাড়া তালিকায় অন্যান্য সরকারি একাধিক সুবিধাভোগী ব্যক্তির নামও রয়েছে।
শোলাকুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক ও শোলাকুড়ী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি এসএম খাইরুল বাশার সোহেল জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে করোনায় এলাকার অহসায় গরীব মানুষ। আর টাকার লোভে ধনীদের সাজানো হয়েছে গরীব।
অভিযোগের বিষয়ে শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। নিয়ম মেনেই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমার আত্মীয়-স্বজনরা তো ইউনিয়নের বাইরের না। তারা যদি গরীব হয় তাহলে তাদের নাম দেওয়া কি অন্যায়?”
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “তদন্ত স্বাপেক্ষে দোষীসাব্যস্ত হলে অব্যশই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মধুপুরের ইউএনওকে বলা হয়েছে।”
মতামত দিন