নিহতের মা বলেন, স্বাবলম্বী হতে চাওয়ায় আমার মেয়েকে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে হত্যা করেছে
নাটোর সদর উপজেলায় সোমবার (২২ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুনের মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।
ঢাবি'র ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) যোগদানের ইচ্ছা ছিল সুমাইয়ার। সেজন্য নাটোর সদরের হরিদাসপুরের বাগানবাড়ির এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে ঢাকায় এসে বিসিএস কোচিং করার ইচ্ছা ছিল তার।
কিন্তু এতে সায় ছিল না শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। তারা সুমাইয়াকে তার স্বপ্ন ভুলে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু মেয়েটি দমে না যাওয়ায় তারা তাকে নির্যাতন করতে শুরু করে। যার ফলে তার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ সুমাইয়ার স্বজনদের।
মেয়ের মৃত্যুর পর সোমবার রাতে নাটোর সদর থানায় সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা। আসামিরা হলেন- সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক হোসেন, শ্বশুর জাকির হোসেন, শ্বাশুড়ি সৈয়দা মালেকা আক্তার ও ননদ জাকিয়া ইয়াসমিন যুথী।
নুজহাত সুলতানা বলেন, “স্বাবলম্বী হতে চাওয়ায় আমার মেয়েকে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে হত্যা করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় সুমাইয়ার শ্বশুর জাকির হোসেন ফোন করে মেয়ে অসুস্থ এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান। হাসপাতালে গিয়ে আমি তাদের কাউকে দেখতে পাইনি। তারা আমার মেয়েকে নাটোর সদর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় রেখে চলে যায়।”
নুজহাত আরও বলেন, “মেয়ের গলা ও হাতে আমরা আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি।”
এ বিষয়ে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে হত্যা ও প্রমাণ গায়েবের অভিযোগ এনে নুজহাত সুলতানা একটি মামলা করেছেন।
“আমরা নিহতের শাশুড়ি সৈয়দা মালেকা ও ননদ জাকিয়া ইয়াসমিন যুথীকে গ্রেফতার করেছি। তার স্বামী মোস্তাক ও শ্বশুর জাকিরের খোঁজে অভিযান চলছে।”
এ বিষয়ে ঢাবি ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, “হত্যা ক্ষমার অযোগ্য একটি অপরাধ। যেভাবে সুমাইয়াকে মারা হয়েছে তা জঘন্য ও নিন্দনীয়। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি আমরা।”
ঢাবি ভিসি আরও বলেন, “আমি সুমাইয়ার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”
মতামত দিন