রবিবার (৫ জুলাই) ভার্চুয়াল আদালতে সাংবাদিকের পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গোলাম মাহবুব খান
দুর্নীতি ও নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় কুমিল্লার মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শরিফুল আলম চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় গ্রেফতার দারোরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জামিন পেয়েছেন।
রবিবার (৫ জুলাই) ভার্চুয়াল আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গোলাম মাহবুব খান ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোর্ট ইন্সপেক্টর সালাউদ্দিন আল মাহমুদ।
এর আগে রবিবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয় বলে জানিয়েছেন মুরাদনগর থানার পরিদর্শক (ইনস্পেক্টর, তদন্ত) মো. নাহিদ। তিনি বলেন, “রবিবার আদালতে হাজির করার পর জামিন আবেদন করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান। আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এর আগে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে কুমিল্লার মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকালের উপজেলা প্রতিনিধি শরিফুল আলম চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে ও তার বাবা-মাকে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুর্বৃত্তরা লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তাদের হাত-পা ভেঙে দেয়। দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
সাংবাদিক শরিফুলের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, “দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির সংবাদ প্রকাশ করে আমার ছেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমার ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। শরিফের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।”
“নিরাপত্তার কথা ভেবে সে একমাস বাড়ির বাইরে ছিলো। গত সপ্তাহে সে বাড়িতে আসে। শরিফ বাড়িতে আছে এ খবর পেয়ে শাহজাহানের লোকজন বাড়িতে ঢুকে তাকে বাড়ির উঠানে টেনে নিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত-পা ভেঙে দেয়। আমি ও তার মা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমাদেরকেও কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। তাদের মারধরে আমার স্ত্রীর বাম হাত ভেঙে গেছে। আমরা চিৎকার করলেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। শরিফুলকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আমরা মুরাদনগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।”
সাংবাদিক শরিফুলের বোন সুলতানা চৌধুরী মুন্নী বলেন, “আমাকে ঘরে পেয়ে সন্ত্রাসীরা শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমি তাদের হাতে কামড় দিয়ে ছুটে গিয়ে প্রতিবেশিদের বাড়িতে গিয়ে ইজ্জত রক্ষা করি।”
মতামত দিন