লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে’
শুক্রবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার সীমানা দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা নদীর পানি হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্ট বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
একই সময়ে হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের উজানে ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। যা স্বাভাবিক বিপদসীমার পানিপ্রবাহ ৫২.৬০ সেন্টিমিটার থেকে ২৮ সেন্টিমিটার বেশি।
শুক্রবার সকাল থেকে পানিপ্রবাহ বাড়তে বাড়তে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি পরিমাপক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশীদ।
তিনি বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রাতে আরও পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। এ জন্য তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুর্ণা, ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডার, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, গোকুন্ডা, রাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে তিস্তা নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, “তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নীলফামারী জেলার জলঢাকা, ডিমলা এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জল কপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নদী তীরবর্তী লোকজনকে নিরাপদে থাকতে দুই জেলার জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
জানতে চাইলে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, “তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের মনিটরিং ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
মতামত দিন