প্রতিকার চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী-সচিবের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিক্ষোভকারীরা
‘‘ভোক্তা অধিকার বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রন আইনের’’ ধারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে সিরাজগঞ্জ শহরের কয়েকটি সড়কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে- ট্রেড লাইসেন্স না থাকা কিংবা থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণ, পণ্যের গুণাগুণ, মান ও পরিমাপ সঠিক না থাকার মতো অভিযোগে। এছাড়া, সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, মাস্ক না পরা ইত্যাদি অপরাধেও জরিমানা করা হচ্ছে।
রবিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে শহরে নির্বাহী হাকিমদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের দ্বন্দ্ব হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা আদায় নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে ছিলেন সিরাজগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। তার ওপর নির্বাহী হাকিমদের দু-একজনের কড়া আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় শহরের এস.এস. রোডে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে “হয়রানির”প্রতিকার চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী-সচিবের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরে দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এক নির্বাহী হাকিমের অসৌজন্যমূলক আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ইস্যুতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা সোমবার (২০ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
আলোচনা শেষে নতুন ‘‘ডিলিং লাইসেন্স’’ তৈরী বা নবায়ন করতে আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে শহরের এস.রোড, মুজিব সড়ক, গোশালা, বাজার স্টেশনসহ শহরের কয়েকটি সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছে বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ শহর দোকান মালিক সমিতির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা তালুকদার বলেন, “লাইসেন্স ও কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও নানা অযুহাতে ত্রুটি ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে জরিমানা এবং হয়রানি করা হচ্ছে। শনি ও রবিবার ১৫টি দোকানে জরিমানা করার সময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে। অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।”
সংগঠনের আহবায়ক সাংবাদিক ফেরদৌস রবিন বলেন, “কথায় কথায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অযথা হয়রানি বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।”
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “নিয়মের বাইরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের ‘ডিলিং লাইসেন্স’ নেই বা থাকলেও মেয়াদ নেই বিধায় জরিমানা দিতে হচ্ছে। এছাড়া, অনেক সময় নিম্নমানের বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি বা গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে।”
মতামত দিন