একটি দুর্ঘটনায় পায়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছিলেন তিনি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোপাল গোস্বামী (৬৫) সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছিলেন। সেজন্য নিজেকে “প্রতিবন্ধী” দাবি করে সরকারি ভাতা তুলে আসছিলেন।
তিনি মির্জাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য।
তার এই জালিয়াতির বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে পড়লে বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে জরুরি সভায় তার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অভিযুক্ত গোপাল গোস্বামীকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তারপরেই ভাতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
সভা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পৌরসভা ও সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলায় মোট ৪ হাজার ৮১৩ জন ও পৌরসভায় ২ হাজার ৩৪ জন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন।
গত বছর মির্জাপুর পৌরসভায় ১১৮ জনকে নতুন করে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতাভুক্ত করা হয়। তার মধ্যে ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোপাল গোস্বামীর নামও।
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে ৯ হাজার টাকা করে ভাতা উত্তোলন করেছেন তিনি।
ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করে গোপাল জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছিলেন। পায়ে ব্যথা আছে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) আছে। প্রতিবন্ধী কার্ড নেই।
এ বিষয়ে মির্জাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম মিয়া বলেন, “গোপাল গোস্বামী কেন প্রতিবন্ধী হবেন? তিনি যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন সেটাই আমার জানা নেই।”
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, “গোপাল গোস্বামীকে আমি চিনি। প্রতিবন্ধী না হয়েও প্রতিবন্ধী ভাতা নেওয়ার বিষয়টি মারাত্মক অপরাধ ও দুঃখজনক।”
মির্জাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম বলেন, “জরিপ ব্যতীত কাউকে ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয় না। এরপরও কেউ প্রতারণা করে ভাতার আওতাভুক্ত হয়ে থাকলে যাচাই-বাছাই করে বাতিল করা হবে।”
এ বিষয়ে ইউএনও আবদুল মালেক বলেন, গোপাল গোস্বামীর নামে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ইস্যু করা প্রতিবন্ধী ভাতার বইটি বাতিল করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটির পরবর্তী সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মতামত দিন