ভুকভোগী নারী গর্ভপাতে রাজী না হওয়ায় এই ঘটনায় অভিযুক্ত মো. সবুজ চার মাস আগে আবুধাবি চলে যান
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার বিধবা নারী (৪০) নয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে সন্তানের স্বীকৃতির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মো সবুজ আবুধাবি প্রবাসী। ভুক্তভোগী ওই নারী তার বাসায় পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন।
এদিকে অভিযুক্ত সবুজ নরোত্তমপুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সহায়তায় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে, চেয়ারম্যান সিরাজুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে ভুক্তভোগী নারীকে সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মো. সবুজ এক বছর আগে আবুধাবি থেকে ফিরে এসে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পরই তার বাড়িতে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। পরে এক রাতে ওই বিধবা নারীকে বাগানে নিয়ে হাত এবং মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সবুজ। এভাবে ওই নারীকে আরও একবার ধর্ষণ করে সে। এই কথা জানালে ভুক্তভোগীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সবুজ। ভয়ে তখন মুখ খোলেননি ওই নারী। কিন্তু এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই বিধবা নারী।
এ খবর শুনে গৃহপরিচারিকাকে সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয় মামুন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় নিজেকে বাঁচাতে গত ৪ মাস আগে আবুধাবি চলে যান সবুজ। বর্তমানে ওই নারী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, “অভাবের তাড়নায় আমি সবুজের বাড়িতে কাজ করতাম। কিন্তু সে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকবার ধর্ষণ করে। এখন আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমি আমার অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় চাই। আমি গরিব সহজ-সরল মানুষ। আমার প্রতি যে নির্যাতন হয়েছে, সেটির উপযুক্ত বিচার চাই।”
এদিকে এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
এরই মধ্যে এলাকা ছাড়া করতে ওই নারীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীর ছেলে। মানসিকভাবেও ওই নারী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে।
নরোত্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযুক্ত মো. সবুজ আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয় হলেও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এই ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের কোনো ধরনের বিচারিক এখতিয়ার নেই। তবে, ওই নারীকে আমরা আইনি সহায়তা দেবো।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, “ওই নারীর ছেলে রবিবার থানায় এসে অভিযোগ করে যে সন্ধ্যা থেকে তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন তার মাকে গুম করেছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে। আমি তাৎক্ষনিকভাবে গিয়াস উদ্দিন এর বাড়িতে পুলিশ পাঠাই। তাকে বাড়িতে না পেয়ে, জিজ্ঞাসাাবাদের জন্য তার ভাই সেলিমকে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাাদে সেলিম এ ব্যাপারে কিছুই জানে না বলে জানায়।”
তিনি আরও বলেন, “এদিকে পরদিন সকালে ওই নারী তার মাকে সাথে করে থানায় উপস্থিত হন। নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়েছিলেন বলে জানান। তবে, ধর্ষণের বিষয়টি মউখিকভাবে জানালেও তিনি এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি।”
মতামত দিন