ফেলে যাওয়ার তিনদিন পর গাড়ি পরিস্কার করার সময় টাকাগুলো পান অটোরিকশা চালক মনির হোসেন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অটোরিকশায় এক যাত্রীর ফেলে যাওয়া সাড়ে ১৪ লাখ টাকা তিন দিন পর মালিকের কাছে ফেরত দিয়ে সততার উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চালক মনির হোসেন। রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়া নিজ কার্যালয়ে টাকার মালিক রহিমা বেগমের কাছে সেগুলো ফেরত দেন। অটোরিকশা চালক মনির হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার রামরাইল গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রহিমা বেগমসহ চারজন গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে মনির হোসেনের অটোরিকসায় চিনাইর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় তাদের সাথে থাকা একটি ব্যাগে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা, জমির দলিল ও ব্যাংকের চেক বই ছিল। রহিমা বেগম অটোরিকসা থেকে নামার সময় ভুলে তার ব্যাগটি ফেলে যান।
শনিবার সকালে মনির হোসেন তার অটো রিকশার সিটের পেছনে একটি ব্যাগ দেখতে পান। পরে তিনি বিষয়টি আখাউড়া উপজেলার বনগজ গ্রামের তার ফুফা মুক্তিযোদ্ধা সানু মিয়াকে অবহিত করেন। সানু মিয়া কাগজপত্র ঘেঁটে একটি মোবাইল নম্বর পেয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারেন টাকাগুলো চিনাইর গ্রামের রহিমা বেগমের। পরে সানু মিয়া বিষয়টি আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়াকে অবহিত করেন এবং তার কাছে টাকাগুলো তুলে দেন।
পরে রবিবার সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়া তার কার্যালয়ে ডেকে রহিমা বেগমের হাতে টাকাগুলো তুলে দেন। টাকা পেয়ে রহিমা বেগম স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং অটোরিকশা চালক মনির হোসেনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এ ব্যাপারে সিএনজিচালিত অটোরিকসার চালক মনির হোসেন বলেন, “যাত্রী নামিয়ে আমি বাড়িতে চলে যাই। পরদিন শুক্রবার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে চলে যাই। শনিবার সকালে অটোরিকসা পরিস্কার করার সময় টাকার ব্যাগটি পাই। টাকাগুলো মালিককে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুব খুশি।”
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়া বলেন, “রহিমা বেগম ভুলে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা অটোরিকসায় ফেলে যান। চালক মনির হোসেন বিষয়টি জানালে আমি প্রকৃত মালিকের কাছে টাকাগুলো তুলেদেই। মানবিক বিবেক এখনও জাগ্রত আছে বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছে।”
মতামত দিন