প্রথমে তাদেরকে চেতনানাশক ইঞ্জেকশন দিয়ে রাজধানী থেকে নিয়ে আসা হতো। সীমান্ত এলাকায় নিয়ে তাদেরকে করা হতো শারীরিক নির্যাতন
ফাঁদ পেতে নারীদের ভারতীয় দালালদের হাতে তুলে দিতো একটি চক্র। তারপর তাদের নামিয়ে দেওয়া হতো বিভিন্ন অপরাধমূলক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। চক্রটির ৫ জনকে গ্রেফতার করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডি বলছে, চক্রটি এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ নারীকে ভারতে পাচার করেছে। রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ওই ৫ অভিযুক্তকে যশোরের শার্শা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলো- মো. শাহিন, রফিকুল ইসলাম, বিপ্লব ঘোষ, আখতারুল এবং বাবু।
সোমবার রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শেখ মো. রেজাউল হায়দার।
অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বলেন, ইতোমধ্যে চক্রটির প্রধান মোহসেনুজ্জামান প্রতীক ওরফে প্রতীক খন্দকার ওরফে বাবুকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই ৫ জনকে যশোর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১১ নভেম্বর এই চক্রের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাচার হওয়ার সময় বেনাপোল সীমান্তের কাছে একটি বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় ১৪ বছরের এক কিশোরীকে।
পরে ভুক্তভোগীকে ভারতে পাচারের পথে উদ্ধার করে পুলিশ। তখন ওই ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। যার তদন্তভার পায় সিআইডি।
পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল বলেন, এর আগে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে নামানোর জন্য নীলা আক্তার (২৬) নামে এক নারীকে ভারত হয়ে সৌদি আরবে পাচার করতে চেয়েছিল চক্রটি। তিনি আদালতে জবানবন্দি দিলে বেরিয়ে আসে এই চক্রটির সদস্যদের নাম।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শাহিন পেশায় গাড়িচালক। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে নারীদেরকে ধরে নিয়ে যেত সে। তারপর তাদেরকে রাখা হতো যশোরের সীমান্তবর্তী এলাকায় রফিকুলের বাড়িতে।
তারপর রফিকুলের সহযোগী বিপ্লব ও বাবলুর মাধ্যমে ভারতে পাচার করা হতো ওইসব নারীদের।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ নারীকে সীমান্তের ওপারে পাচার করেছে তারা। মালয়েশিয়া ও ভারতে চাকরির কথা বলে ভুক্তভোগীদেরকে প্রথমে রাখা হতো রফিকের বাড়িতে। তারপর তাদেরকে ভারতের রাজকোটে পাচার করে দেওয়া হতো।
ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানিয়েছে, প্রথমে তাদেরকে চেতনানাশক ইঞ্জেকশন দিয়ে রাজধানী থেকে নিয়ে আসা হতো। সীমান্ত এলাকায় নিয়ে তাদেরকে করা হতো শারীরিক নির্যাতন। ডাক্তারি পরীক্ষায়ও শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে।
মতামত দিন