বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসিলিটি সার্ভে অনুযায়ী, নিউমোনিয়াজনিত শিশু মৃত্যুর ৪৫% ঘটে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
বাংলাদেশে প্রতিবছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ হাজার ৩০০টি শিশুর মৃত্যু ঘটছে বলে আইসিডিডিআর,বি’র মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী আহমেদ এহসানুর রহমান জানিয়েছেন।
বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (১১ নভেম্বর) মহাখালীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই তথ্য তুলে ধরেন।
ইউএসএইড এর সহায়তায় এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আইসিডিডিআর,বি’র রিসার্চ ফর ডিসিশন মেকার্স (আরডিএম) প্রকল্প ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্ট (ডিফরআই)।
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৭- এর বরাত দিয়ে নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর তথ্য তুলে ধরেন এহসানুর রহমান।
তিনি বলেন, ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়া পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে মাত্র ৪২%কে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৩৪% শিশু অ্যান্টিবায়োটিক পেয়ে থাকে।
বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসিলিটি সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, নিউমোনিয়াজনিত শিশু মৃত্যুর ৪৫% ঘটে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
সভায় মূল প্রবন্ধে এহসানুর রহমান বলেন, ২০১১ সালে দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ১১.৭টি শিশু মারা যেত নিউমোনিয়ায়। বর্তমানে সেই সংখ্যা ৮.১। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা তিনটিতে নামিয়ে আনতে হবে।
দেশে নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়া শিশুর ৫২%ই বাড়িতে মারা যায় জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা কোনোও ধরনের চিকিৎসা পায় না। অপরদিকে ৩% শিশু চিকিৎসা পেয়েও বাড়িতে মারা যাচ্ছে। আবার হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার পরেও নিউমোনিয়ায় মারা যাচ্ছে ৪৫% শিশু।”
আহমেদ এহসানুর রহমান বলেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর শিশুরা হাইপোক্সেমিয়ায় (রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা) বেশি মারা যায়। কোভিডের সময় এটা আরও বেশি হয়। যেসব শিশুর অক্সিজেনের স্বল্পতা থাকে, তাদের নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার বেশি। তাই প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পালস অক্সিমিটার থাকা জরুরি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মাত্র ৫% স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিউমোনিয়ার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সক্ষমতা আছে। ৫০% স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নেই। এক-তৃতীয়াংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অক্সিজেনের অন্যান্য সোর্স অনুপস্থিত। পালস অক্সিমিটার রয়েছে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ জেলা হাসপাতালে।”
বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়ার হার ১৮% বলেও জানান অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন।
মতামত দিন