‘ওরা বাড়ির টয়লেটের সোকওয়ালের ঢাকনা খুলে তার ভিতরে আমাকে ফেলার চেষ্টা করে। এরপর কী ঘটেছে তা আর বলতে পারি না’
মুখের ভেতর কাদামাটি, হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা; এমনই অবস্থায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে আঞ্জুয়ারা (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে মৃত ভেবে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূকে পলিথিনে মোড়ানো ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। নির্যাতিত ওই গৃহবধূ উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামের সাহাজুদ্দিনের স্ত্রী।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রৌমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম আকন্দ জানান, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই রফিকুল জানান, “আগে রোগী তার জ্ঞান ফিরে পাক। পরে তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জ্ঞান ফিরে পেয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ আঞ্জুয়ারা বলেন, “ঘটনার রাতে (সোমবার দিবাগত রাতে) একা বাড়িতে ছিলাম। গভীর রাতে স্থানীয় এক নারী ডেকে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। পরে দরজা খুলতেই দু’জন প্রথমে আমাকে মারধর করে এবং গলায় ছুড়ি ধরে বলে, জমির দলিল কোথায়, দলিল দে। চিৎকার করলে শেষ করে দেব।”
আঞ্জুয়ারা আরও বলেন, “ওরা বাড়ির টয়লেটের সোকওয়ালের ঢাকনা খুলে তার ভিতরে আমাকে ফেলার চেষ্টা করে। এরপর কী ঘটেছে তা আর বলতে পারি না।”
পরে সকালে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
কাউকে চিনতে পেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই গৃহবধূ জানান, এলাকার হাছেন আলী, বাবলু, জলিল ও হাফিজুর নামে চার জনকে চিনতে পেরেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, অভিযুক্ত আব্দুল জলিলসহ অন্যরা। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে গোলাবাড়ি গ্রামের আসছার আলীর ছেলে হাসেন আলী গং এর সাথে একই এলাকার সাহাজুদ্দিন গং এরমধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ ছাড়াও এ ঘটনায় অন্য কোনো পক্ষ জড়িত কিনা তা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি এলাকাবাসীর।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, “পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মতামত দিন