মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের ‘আস্থার অভাবের’ কারণে ২০১৮ সালের নভেম্বরে ও ২০১৯ সালের আগস্টে দুই দফায় প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমার বলেছে যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের জন্য দু’টি তারিখ দেওয়ার পরেও তারা কাউকে ফেরত নেয়নি।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মিয়ানমার কোনো চাপ অনুভব করে না এবং তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের আহ্বানে সাড়া দেয় না। এবিষয়ে আমরা যদি শতবার জানতে চাই, তারা দু’বার জবাব দেয়।”
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমার দু’বার তারিখ দেয় এবং বাংলাদেশ তখন পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা (মিয়ানমার) যাচাই-বাছাই শেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।”
ড. মোমেন বলেন, “মিয়ানমার ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের সাথে ব্যবসা করছে এবং বিনিয়োগ পাচ্ছে। রাশিয়া ও চীন সবাইকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করেছে। সমাধানের জন্য আমরা দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়-সব ফ্রন্টে নিযুক্ত আছি।”
তিনি বলেন, “চীন স্বেচ্ছায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এসেছিল তবে এর অর্থ এই নয় যে মিয়ানমার সবসময় চীনের কথা শুনবে।”
ড. মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা উন্নয়নের দিকে বেশি মনোনিবেশ করছে। তবে বাংলাদেশের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফিরিয়ে দেওয়া।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে স্থানান্তর করতে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও জানান তিনি।
কোভিড-১৯ মহামারি ও মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনের কারণে প্রত্যাবাসন আলোচনা স্থগিত রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-চীন-মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় আলোচনা প্রক্রিয়াও পুনরায় শুরু করবে বাংলাদেশ যাতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে এই জাতীয় তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের “আস্থার অভাবের” কারণে ২০১৮ সালের নভেম্বরে ও ২০১৯ সালের আগস্টে দুই দফায় প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর আগে, ২০১৭ সালে ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
মতামত দিন