ইতোমধ্যেই চরটি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নজর পড়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে অফিস ও ট্যুরিস্ট স্পট করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বন বিভাগের মতে, এই মুহুর্তে চরটিকে বিরক্ত না করলে সেটি বঙ্গোপসাগরের বুকে আরও একটি সুন্দরবন হয়ে উঠবে
সুন্দরবনের সর্বশেষ সীমানা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা “বঙ্গবন্ধুর চর” সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের নীলকমল অভয়ারণ্য কেন্দ্রের আওতার মধ্যে পড়েছে ওই চরটি। প্রায় ১০ বছর আগে চরটি বন বিভাগের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর থেকেই সেখানে নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছে বন বিভাগ। এখন সেখানে একটি টহল ফাঁড়ি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৪ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান চরটি পরিদর্শন করার পর এ নির্দেশ দেন। এছাড়া চরটির সার্ভে করার জন্যও বলা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু চরের আয়তন প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার। তবে ধীরে ধীরে সেটির আয়তন আরও বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরটিতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নজর পড়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের অফিস ও ট্যুরিস্ট স্পট করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এই মুহুর্তে ওই চরকে বিরক্ত না করলে সেটিও হয়ে উঠবে বঙ্গোপসাগরের বুকে আরেকটি সুন্দরবন।
কে কবে চরটির নামকরণ “বঙ্গবন্ধুর চর” করেছে তা বলতে পারেন না বন কর্মকর্তারা। তবে তারা শুনেছেন জেলেরাই প্রথম চরটির অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। এরপর কেউ হয়তো চরটির নামকরণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর চর। সেই থেকে চরটি ওই নামেই পরিচিতি পেয়েছে।
সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসানসহ কয়েকজন বন কর্মকর্তা চরটি পরিদর্শন করেন। ঢাকা ট্রিবিউন
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক মো. আবু সালেহ বলেন, “ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধুর চরে ম্যানগ্রোভ বনের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ জন্মাতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে চরটি হয়ে উঠছে সুন্দরবনের অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “ইতোমধ্যে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বন্য পশুপাখিও বিচরণ করতে দেখা গেছে। এ কারণে সেটি সংরক্ষণ করাও জরুরি হয়ে পড়েছে। কেউ যেন ওই বনের ক্ষতি করতে না পারে এ কারণে সেখানে টহল ফাঁড়ি করা হবে। ফাঁড়ি স্থাপিত হলে ওই চরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও বনের পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব হবে। চরটি আগে বন বিভাগের নীলকমল অভয়ারণ্য কেন্দ্রের আওতায় তদারকি করা হতো। চরে স্থাপিত ফাঁড়িটিও ওই কার্যালয়ের আওতায় থাকবে।”
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, “বঙ্গবন্ধু চরটি বেশ দুর্গম। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ সেখানে যেতে চান না। সচিব হিসেবে জিয়াউল হাসান প্রথম চরটি পরিদর্শন করেছেন। চরের ভূ-প্রকৃতি দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। চরটিতে যেন জীববৈচিত্র্যের পরিবেশ অক্ষুন্ন থাকে ও কেউ ক্ষতিসাধন করতে না পারে এ কারণে সেখানে একটি টহল ফাঁড়ি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার ওই নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানে একটি ফাঁড়ি করার কাযক্রম চলছে।”
মতামত দিন