গত ১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের মৃত্যু হয়
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে “নির্যাতনে” মারা যাওয়া রায়হান আহমদের ভিসেরা রিপোর্টে বিষক্রিয়ার প্রমাণ মেলেনি। অতিরিক্ত আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে তাদের কাছে আসে। রিপোর্টে বিষক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভিসেরা রিপোর্ট এরই মধ্যে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গত ২২ অক্টোবর রায়হানের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে পিবিআই। ওই রিপোর্টে রায়হানের শরীরে ১১১ টি আঘাতের চিহ্ন পান ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা, যার মধ্যে ১৪টি গুরুতর আঘাত ছিলো। ভোতা অস্ত্রের আঘাতেই তার শরীরের জখম হয় ময়নাতদন্তকারীরা জানান। প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও অনুরুপ আঘাত ছিল। সে সময় রায়হানের ভিসেরা সংগ্রহ করে তার চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।
গত ১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। এ ঘটনায় পর ওই ফাঁড়ি ইনচার্জসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন- ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তৌহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদ। আর প্রত্যাহার করা তিনজন হলেন সহকারী উপদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন।
১৪ অক্টোবর এ মামলার তদন্তভার পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ২০ অক্টোবর ফাঁড়ি ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্ত এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা এবং তথ্য গোপনের অভিযোগ ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আলোচিত এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মতামত দিন