সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যা শিশুর বাড়িতে হাজির হয়ে মা-বাবার হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন
“কন্যাসন্তান বোঝা নয় আশীর্বাদ” এ বার্তা ধারণ করে সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যা শিশুর বাড়িতে হাজির হয়ে বাবা-মায়ের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন টাঙ্গাইল কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ মোশারফ হোসেন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে উপহার নেন চার কন্যাসন্তানের বাবা-মা।এর আগে কন্যাসন্তানের জন্ম হলে উপহার দেবেন, এমন একটি স্ট্যাটাসও দেন তিনি। যা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
এমন ব্যতিক্রমী ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় তিনি প্রসংশায় ভাসছেন। তার এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। শুধু তাই নয় “কন্যাসন্তান মা-বাবার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ নিয়ে দুনিয়ায় আগত করে। কন্যাসন্তান জন্ম হলে ফোন করুন উপহার পৌঁছে যাবে সাথে সাথেই” এ ধরনের ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়েছেন তার অফিস রুমও।
উপহার পাওয়া সুমাইয়া আক্তার সাথী এবং তার স্বামী সাইফুর রহমান ফারুক জানান, কন্যাসন্তান জন্ম হলেই পাবেন পুরস্কার- ফেসবুকে পুলিশ কর্মকর্তার এমন স্ট্যাটাস দেখে তারা মোশারফ হোসেনকে নিজেদের মেয়ে জন্মের কথা জানান। পরে বিকেলে হঠাৎ করেই বাসায় এসে উপহার সামগ্রী দিয়ে যান তিনি।
উপহার পাওয়া মাসুদা খাতুন বলেন, “কন্যাসন্তান জন্ম হলেই পাবেন পুরস্কার, ফেসবুকে পুলিশ কর্মকর্তার এমন স্ট্যাটাস দেখে আমি পুরস্কার নিতে এসেছি। আমি পুরস্কার পেয়ে খুবই আনন্দিত। আমার প্রথম কন্যা সন্তান হয়েছে। কন্যা সন্তান হওয়ায় আমি এবং আমার স্বামী দুজনেই খুবই খুশি।”
এ বিষয়ে গোলাম রাব্বানী রাসেল বলেন, “আমি দুইটি কন্যা সন্তানের পিতা। আমি খুবই খুশি। আর পুলিশ কর্মকর্তার উপহার পেয়ে আনন্দিতও হয়েছি।”
এ ব্যাপারে কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ মোশারফ হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে মানুষের কন্য সন্তানের প্রতি অনীহা ভাব। কন্যা সন্তান জন্ম নিলে অনেকে মন খারাপ করেন। এমনটা যাতে কেউ না করেন, সেজন্য মেয়ের বাবা-মাকে উৎসাহ, অনুপ্রেরনা দিতে এবং ছেলে-মেয়ে সবাই সমান-এটা বোঝাতে আমি এমন উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে মেয়েরা শিক্ষায় এবং কর্মজীবনে এখন অনেক এগিয়েছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে নারীরা আছে। তাই মেয়ে কোনো বোঝা নয়। সঠিকভাবে বড় করতে পারলে ছেলে-মেয়ে সবাই মানবসম্পদ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে আমি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শুরুতেই এ কাজের জন্য আমাকে অনেকেই উৎসাহ দিচ্ছেন।” তার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মতামত দিন