ধর্ষণের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ভুক্তভোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে
রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের নিহত “ও” লেভেলের ছাত্রীর ময়নাতদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ফলে ভুক্তভোগীর যোনি ও পায়ুপথ উভয় স্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ভুক্তভোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে নিহত ওই শিক্ষার্থীর ময়না তদন্ত শেষ হয়।
এছাড়া ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যা থেকে জানা যাবে- ভুক্তভোগীকে নেশাজাতীয় কোনো কিছু খাওয়ানো বা সেবন করানো হয়েছিল কিনা।
ডা. সোহেল যোগ বলেন, “এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এর আগে ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীর প্রকৃত বয়স নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। পরে স্বজনরা সৎকারের জন্য হাসপাতাল থেকে তার লাশ বুঝে নেন।
এদিকে, নিহত ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় একমাত্র আসামি তানভীর ইফতেফার দিহান (১৮) দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন - ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার দিহানের
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আসামি দিহান ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। পরে তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান।
এরপর দিহানকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ইফতেখার ফারদিন দিহানকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।
যদিও মামলার নথিগুলোতে অভিযুক্তের বয়স ১৮ বছর উল্লেখ করা হয়েছে, তবে পুলিশ জানিয়েছে সরকারি নথিপত্র পাওয়া গেলেই তারা বিষয়টি নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন।
ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় জানান, দিহান ঢাকার একটি স্কুলে “এ” লেভেলের ছাত্র।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে বাড়ি থেকে বের হন এবং সে সময় তার মাকে ফোনে জানান যে তিনি কোচিং ক্লাসে যাচ্ছেন।
পরে দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান ভুক্তভোগীর মাকে ফোন করে বলেন, যে তার মেয়ে কলাবাগানে তার বাড়িতে গিয়েছিল যেখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ সময় দিহান ভুক্তভোগীকে আনোয়ার খান মর্ডাণ হাসপাতালে নিয়ে যান এবং তার মাকেও সেখানে আসতে বলেন।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা যখন হাসপাতালে পৌঁছান, সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে জানান, তার মেয়েকে ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দিহানের পরিবারের সদস্যরা বাইরে থাকার সুযোগে তার মেয়েকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে দিহান ও তার তিন বন্ধুকে আটক করে।
ভুক্তভোগীর বাবা ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দিহান তার মেয়েকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, “তদন্তকারীরা দিহানের তিন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হবে।”
মতামত দিন