অভিযানে ৫৩টি জীবিত সুন্ধি কাছিমসহ নিরাপদ সরকারকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন
মুরগী ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে কচ্ছপের ব্যবসা করে আসছিলেন নিরাপদ সরকার (৬৯) নামে এক চোরাকারবারি। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বটিয়াঘাটা উপজেলার বটিয়াঘাটা মুরগীর বাজারে খুলনার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের অভিযানে ৫৩টি জীবিত সুন্ধি কাছিমসহ নিরাপদ সরকার আটক করা হয়।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। নিরাপদ সরকারের বাড়ি উপজেলার হেতালবুনিয়া গ্রামে।
বন বিভাগ খুলনা সার্কেলের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক রাজু আহমেদ বলেন, মুরগী ব্যবসায়ী নিরাপদ সরকার মুরগী ব্যবসার পাশাপাশি আড়ালে কচ্ছপ বিক্রি করতেন। এ সময় ক্রেতা সেজে ৫৩টি জীবিত সুন্ধি কচ্ছপসহ তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ৩৪ (খ) ধারায় আসামিকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ও কচ্ছপগুলোকে উপযুক্ত পরিবেশে অবমুক্ত করার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সুন্ধি কাছিম (Indian flapshell turtle) স্থানীয়ভাবে ‘চিতি কাছিম’ নামেও পরিচিত। দুই থেকে তিন দশক আগেও দেশের নদী, খাল, বিল, হাওর ইত্যাদি জলাশয়ে প্রচুর সুন্ধি কাছিম দেখা যেত, তবে বাসস্থান ধ্বংস ও ক্রমাগত শিকারের কারণে এই জলজ প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) রেড লিস্ট গ্রন্থে সুন্ধি কাছিমকে কম উদ্বেগের (least concern) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রাণীটি বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী সংরক্ষিত। তাই সুন্ধি কাছিম হত্যা বা এর ক্ষতিসাধন শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
মতামত দিন