এর আগেও একাধিকবার রোহিঙ্গাদের ঝুপড়িঘর গুলোতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হলো তা কেউ বলতে পারছেন না
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে ঝুপড়ি বসতিঘর। গত এক সপ্তাহে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা ঝুপড়িঘর। এদিকে আগুন লাগার বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকেই।
বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ অগ্নিকাণ্ডে ৫১৩টি রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি বসতি পুড়ে গেছে। ঘটনার দিন গভীর রাতে ক্যাম্পের ই-ব্লকে আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
একইভাবে গত সোমবার ১৮ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী শফিউল্লাহ কাটা ১৬নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে ৪টি স্কুল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এর পূর্বেও একাধিকবার রোহিঙ্গাদের ঝুপড়িঘর গুলোতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হলো তা কেউ বলতে পারছেন না।
জানতে চাইলে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, “আগুন লাগার সূত্রপাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে লোকেমুখে গ্যাস সিলিন্ডার ও মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।”
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পালংখালী ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা আলী আহমদ বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার বিষয়টি রহস্যজনক। প্রতিটি আগুন ধরার ঘটনা ঘটে গভীর রাতে। এসব ঘটনায় কোনো ধরনের হতাহত নেই। কিছু এনজিও এসব কাজে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, নতুন বাড়ি তৈরিতে তারা নতুন বাজেট বরাদ্দ পান। এসব বিষয় গুলো তদন্ত হওয়া দরকার।”
কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ রফিক জানান, "গত ১৪ জানুয়ারি রাতে হঠাৎ একটি বোবা নারীর (নাম জানা নেই) ঝুপড়িঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে কি কারণে আগুন লেগেছে কেউ কোনভাবে এর রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। বর্তমানে পুড়ে যাওয়া ঝুপড়িঘর গুলোর মেরামত অব্যাহত রয়েছে। অনেকেই এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।”
একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা (মাঝি) শফিউল্লাহ জানান, “শুনেছি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোয়ান হায়াতের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মতামত দিন