ওই ঘটনায় শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) ডেপুটি জেলারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করেছে কারাকর্তৃপক্ষ
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে কয়েদির সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের ঘটনায় ডেপুটি জেলারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্প্রতি কারাগারে বন্দি দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম কেলেঙ্কারি হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা ও হলমার্কের কর্মকর্তা মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদের সঙ্গে এক নারীর একান্তে অবস্থানের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিলো কারাকর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) ওই তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনাটির তদন্ত করছে দু’টি দল।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদের ভায়রা ও হলমার্কের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদের সঙ্গে সম্প্রতি এক নারীর একান্তে অবস্থানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে।
৬ জানুয়ারি কারাগারের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশনের (সিসিটিভি) ক্যামেরায় এই চিত্র ধরা পড়ে। পরবর্তীতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ফুটেজের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে ওঠে। এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারিকালে কারাগারের বন্দিদের সঙ্গে কোনো দর্শনার্থীর সাক্ষাতও নিষিদ্ধ রয়েছে।
কারাগারে বন্দি হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদের ভায়রা ও হলমার্কের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ দেশের অর্থিক খাতের অন্যতম কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কারাগারের ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত ওই ফুটেজে দেখা যায়, কালো রংয়ের জামা-কাপড় পরে গত ৬ জানুয়ারি কারাগারের কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় হলমার্কের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ ঘোরাফেরা করছে। কিছুক্ষণ পরই বাইরে থেকে এক নারী সেখানে প্রবেশ করে। তার পরনে ছিল বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন এসময় কারাগারে ছিলো।
ওই নারী দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করে। এসময় তার সাথে দু’জন যুবক ছিল। ডেপুটি জেলার সাকলায়েন তাকে সেখানে রিসিভ করেন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। এর অনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে সে অফিসে নিয়ে আসা হয়।
এপ্রসঙ্গে গাজীপুরের এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে ওই ঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ১২ জানুয়ারি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমটির অপর সদস্যরা হলেন গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কারা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তার সঙ্গে উপ-সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তাদের সাত কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। দোষী সবাই শাস্তি পাবে।
মতামত দিন