গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের এক ফ্লাইটে সিলেট আসা ১৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে
কোভিড -১৯- টেস্টে করোনাভাইরাস পজিটিভ আসা যুক্তরাজ্য ফেরত ২৮ জনের পুনর্পরীক্ষায় ২৫ জনের ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। পজিটিভ এসেছে মাত্র ৩ জনের।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআর ল্যাব থেকে তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যে চিহ্নিত করোনভাইরাসের নতুন ধরনটি তাদের শরীরে রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে ও বিশদ বিশ্লেষণের জন্য এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) এর সাত সদস্যের একটি দল সিলেটে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে ভাইরাসটির নতুন ধরনটি যা গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে চিহ্নিত হয়েছে,শরীরে কমপক্ষে ৭০% এর বেশি ছড়িয়ে যেতে পারে। তবে এটি আগের চেয়ে মারাত্মক কিনা তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে করোনাভাইরাস পজিটিভ ২৮ জন যুক্তরাজ্য প্রাবাসীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ৩ জনের করোনাভাইরাস পজিটিভ এবং ২৫ জনের করোনাভাইরাস এসেছে।
ডা. আনিসুর রহমান আরও বলেন যে পূর্ববর্তী নমুনায় ত্রুটি বা পরীক্ষার ত্রুটি বা এরই মধ্যে রোগী নিরাময় হতে পারে।
আইইডিসিআর টিম মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে পরিস্থিতি আরও বিশদে পরীক্ষা করতে এই প্রবাসীদের নমুনা সংগ্রহ করে। নমুনাগুলি সংগ্রহ করার পরে তারা আরটিপিসিআর ল্যাব পরিদর্শন করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা যুক্তরাজ্যে চিহ্নিত করোনভাইরাসকে নতুন করে বহন করছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে আবিষ্কার হয়ে যায়নি। তবে যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে আগত প্রবাসীদের কঠোরভাবে কোয়ারেন্টিন পালন করতে হবে।
সিলেট সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল জানান, যুক্তরাজ্য থেকে যাত্রীদের কাছ থেকে করোনাভাইরাস পজিটিভ প্রতিবেদন পাওয়ার পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আইইডিসিআরের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আইইডিসিআর ইতিমধ্যে সাত জনের একটি দল পাঠিয়েছে। তারা সিলেটে চার বা পাঁচ দিন অবস্থান করবে।
একটি সূত্র জানায়, ২১ শে জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমান (বিজি -২০২) তে ১৫ জন যাত্রী নিয়ে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেটে পৌঁছেছিল। সিলেট নগরীর ৭ টি ভিন্ন হোটেলে যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছিল।
সেখানে চার দিন থাকার পরে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারী রবিবার তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
পরের দিন (২৫ জানুয়ারি), তাদের কোভিড -১৯ প্রতিবেদনটি বেসরকারী ল্যাব পিসিআর ল্যাবে পজিটিভ এসেছে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ওসমানী বিমানবন্দর সূত্র থেকে জানা গেছে, ৪ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ২০ দিনে ৫৪৪ জন প্রবাসী যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে ফেরত এসেছে।
তাদের মধ্যে ৩৭২ জন প্রবাসী সরকারী নির্দেশনা অনুসারে নিজস্ব ব্যয়ে কোয়ারিন্টিন শেষ করে করোনভাইরাস সনাক্তকরণ পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে তারা দেশে ফিরেছে।
সিলেটে বর্তমানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন হোটেলগুলিতে ১৪৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, প্রবাসীদের যথাযথ সঙ্গতি নিশ্চিত করতে সিলেট মহানগর পুলিশের ৪৬ জন সদস্য পুরো সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন।
যে হোটেলগুলিতে প্রবাসীরা অবস্থান করছে এবং খাদিমপাড়ার করোনভাইরাস বিচ্ছিন্নকরণ কেন্দ্রে কোভিড -১৯ দ্বারা আক্রান্ত ২৮ জন যাত্রীর নিরাপত্তার জন্যও সিলেট মহানগর পুলিশ কাজ করছে। প্রবাসীরা যাতে পৃথকীকরণ কেন্দ্রগুলি ছেড়ে যেতে পারবেন না সে বিষয়ে তারা নজর রাখছে।
মতামত দিন