'এমসি ঘটনার দাখিল করা দুটি মামলার সাক্ষ্য একসাথে নিতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলেও, উচ্চ আদালতে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সাক্ষীদের হাজির করা হয়নি'
সিলেটের এম সি কলেজে গণধর্ষণ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আরেক দফা পেছানো হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় মামলার ৮ আসামিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হকের আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু সাক্ষী না আসায় পিছিয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, "এম সি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি এবং বাদীর কাছে চাঁদা দাবির ঘটনায় আরেকটি মোট দুটি পৃথক মামলা হয়। চার্জশিট দাখিলের পর গত ২৪ জানুয়ারি আদালতে এ দুটি মামলার একসাথে বিচার কাজ শুরু করার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু বিচারক আবেদনটি খারিজ করে দেওয়ায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।"
উচ্চ আদালতে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সাক্ষীদের হাজির করা হয়নি বলে তিনি জানান।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি অ্যাডভোকেট রাশিদা সাঈদা খানম জানান, "যে কোনো মামলায় সচরাচর বাদী পক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পুলিশের মাধ্যমে সমন পাঠিয়েও বুধবার (২৭ জানুয়ারি) আদালতে সাক্ষীদের হাজির করা যায়নি।"
তিনি বলেন, "আলোচিত এ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আমরা দ্রুত শেষ করতে চাই, কিন্তু চাঁদাবাজি মামলা এখনো প্রস্তুত নয়।"
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "বুধবার(২৭ জানুয়ারি) এ মামলার এক আসামি মাহবুবুর রহমান মাসুম জামিনের প্রার্থনা জানালেও আদালত তা নামঞ্জুর করেন।"
আদালত সূত্র জানায়, রবিবার(২৪ জানুয়ারি) মামলার ৮ আসামি ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লষ্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।
গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম ) আবুল কাশেমের আদলাতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। এতে সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ছয় জনের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণে জড়িত থাকা এবং রবিউল ও মাসুমের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে দুই দফা শুনানি পেছানোর পর গত ১২ জানুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলার অভিযোগ(চার্জ ) গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে যাওয়া দম্পতির স্বামীকে আটকে রেখে কলেজ ছাত্রাবাসের সামনে নববধুকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা কর্মী।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে সব আসামিই কারাগারে রয়েছে।
মতামত দিন