এই মুহুর্তে, নতুন অর্ডারের বিষয়ে পশ্চিমা ক্রেতাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে
কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রম শুরুর পরে নতুন কাজের অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকরা।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা গার্মেন্টস মালিক ফজলে শামীম এহসান বলেন, এই মুহুর্তে, নতুন অর্ডারের বিষয়ে ক্রেতাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
পরিস্থিতি উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এবং সবাই ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহী হওয়ায় ক্রেতারা নতুনভাবে বেচাকেনার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে এ নিয়ে কটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাসান বলেন, অর্ডারের পরিমাণ আগের চেয়ে ভাল।
প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, আগের মাসগুলোর মতো অর্ডারের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কম নয়। বর্তমানে অর্ডারের পরিমাণ প্রায় স্বাভাবিক।
তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুবানা হক। তিনি বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার ট্রেন্ডে কোনো পরিবর্তন ঘটে নি। বর্তমান অর্ডারের পরিমাণ করোনাভাইরাস পূর্বের সময়ের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম।
তিনি আরও বলেন, “জনগণের এই সময়ে চাহিদা সীমিত। সুতরাং, অর্ডারের পরিমাণ কম হওয়াই স্বাভাবিক বিশেষ করে স্টাইলের ক্ষেত্রে অর্ডার পরিমাণ কম হতে বাধ্য।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন বাইরের পোশাক এবং নিটওয়্যার পণ্যগুলির জন্য অর্ডারের গতি ভাল।
রুবানা জানান, “রপ্তানি এখনও কমছে। সুতরাং পশ্চিমের ক্রেতারা ফিরে না আসা পর্যন্ত সামগ্রিক রপ্তানি কীভাবে বাড়বে জানি না।”
অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সাধারণত গার্মেন্টস রপ্তানির ৮৪ শতাংশ থাকে। তা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমে প্রায় ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে, কিছু রপ্তানিকারক ইতোমধ্যে কয়েক মাসের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্ডার বুক করেছেন যা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো চালানোর জন্য পর্যাপ্ত।
স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, "কমপক্ষে আগামী ছয় মাস প্রতিষ্ঠানটি চালানোর জন্য আমার পর্যাপ্ত কাজের অর্ডার রয়েছে। চলতি বছরে দুই থেকে তিন হাজার নতুন কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।"
পশ্চিমা বিশ্বে কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণ অর্ডারের নতুন প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করছে তবে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
খালেদ বলেন, "যদি আর কোনো সংক্রমণ না হয়, তবে আগের অর্ডারগুলো পুনরুদ্ধারের আশা করছি।"
এদিকে বিজিএমইএর প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান বলেছিলেন, কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে ক্রেতাদের উৎপাদন ব্যয় সম্পর্কেও চিন্তা করা উচিত।
ক্লাসিক ফ্যাশন কনসেপ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, "ক্রেতারা অনলাইনভিত্তিক বিক্রয়কে প্রাধান্য দিচ্ছে। কেননা মহামারির সময় অনলাইন জমজমাট আরও হয়ে উঠেছে।"
“দাম ভাল তবে অর্ডারের আকার ছোট হবার কারণে এটি উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু এর কোনও বিকল্প নেই এবং ভবিষ্যতের জন্য আমাদের সব ধরনের কাজেই অভ্যস্ত হতে হবে। ভবিষ্যতে বিক্রয় ই-বাণিজ্যভিত্তিক হবে,” তিনি যোগ করেন।
মতামত দিন