শুক্রবার সকাল ৯টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে তার মরদেহ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আইনজীবী মওদুদ আহমদের মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ৬টায় তার মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান এ তথ্য জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতাদের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণের কথা রয়েছে। পরে তার মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালের মর্গে নেয়া হবে।
মঙ্গলবার ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ (৮১) সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মওদুদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। পরে মওদুদের মরদেহ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে নেয়া হবে। সেখানে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
পরে মওদুদের মরদেহ নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নেয়া হবে। বেলা আড়াইটায় কবিরহাট ডিগ্রি কলেজে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার মরদেহ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তার গ্রামের বাড়িতে নেয়া হবে। বিকাল ৪টায় বাশুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে চূড়ান্ত জানাজার পরে বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বিএনপি নেতার কিডনিতে মারাত্মক জটিলতা এবং ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা কমে গিয়েছিল।
গত ৩০ ডিসেম্বর, রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃদু স্ট্রোকও হয় তার।
পরে ৭ জানুয়ারি বিএনপির এ নেতার হার্টে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। তাকে ১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মওদুদকে গত ৯ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।
তার স্ত্রী হাসনা মওদুদ পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের মেয়ে। তার কন্যা সন্তান রয়েছেন। তার দুই ছেলে মারা গিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান গঠিত বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ।১৯৮৫ সালে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের সরকারের পতনের পরে মওদুদ ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে পাঁচবার এবং বগুড়া-৬ আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে মওদুদের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার শোক পালন করেছে তার দল বিএনপি।
মতামত দিন